আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে যড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্র যারা করে, তাদের জন্মই হয়েছিল ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। তারা সেই ষড়যন্ত্র থেকে দূরে আসতে পারেনি। তারা সব সময় একটা না একটা ষড়যন্ত্র করেছে। সম্প্রতি যে ষড়যন্ত্র করেছে, তারা ও তাদের সহোদর জামায়াতে ইসলামী শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই লবিস্ট নিয়োগে ৪ দশমিক ১৩২ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। এর মধ্যে জামায়াত দশমিক ৩৮২ মিলিয়ন এবং বিএনপি ৩ দশমিক ৭৫ ডলার খরচ করেছে।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের এক আলোচনা সভায় শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে লবিস্ট ষড়যন্ত্র এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ আইনবিরোধী নয়। বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লবিস্ট নিয়োগ করে। ব্যবসার জন্য ও রাজনৈতিক কারণে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। কিন্তু পৃথিবীতে কোনো দেশ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, একটা বিরোধী দল যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করার কাহিনী। এটা আমরা প্রথম জানলাম। অন্য কোনো দেশের বিরোধী দল দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে, এটা আগে দেখিনি।
এ সময় ড. মোমেন বলেন, আমরা বলতে চাই বিএনপি-জামায়াত লবিস্ট নিয়োগের হিসাব-নিকাশ দেখিয়েছে কিনা। এই টাকা কীভাবে বিদেশে পাঠাল। ট্যাক্স দিয়েছে কিনা। আইনের ব্যত্যয় হয়েছে কিনা। এসব আমাদের জানার বিষয়। তিনি বলেন, বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বলেছে, বাংলাদেশে কোনো সহায়তা দেবেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক। তারা এখানে অনেক বিনিয়োগ করেছে। এতে আমাদের উন্নয়ন হয়েছে। তবে এই বিনিয়োগ যেন না করে, সেজন্য লবিং হয়েছে। যারা এসব করেছে, তারা বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল চায় না। এটা নিয়ে দেশবাসীর প্রশ্ন করা উচিত। ড. মোমেন বলেন, বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের কাছে ১৮টি চিঠি দিয়েছে। এসব চিঠিতে অসত্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। এসব মানুষকে জানানো দরকার।
ড. মোমেন বলেন, র্যাবের কারণেই সন্ত্রাস কমেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কাজ করছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে র্যাবের বিরুদ্ধেই এখন ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, বিদেশে আমাদের লবিস্ট আমাদের দূতাবাস। তারা আমাদের এক নম্বর লবিস্ট। তবে দেশের জন্য নিজের পয়সায় অনেকেই লবিস্টের কাজ করেন। আমিও দেশের জন্য লবিস্টের কাজ করেছি। কিন্তু কোনোদিন পয়সা নেইনি। অনেক প্রবাসী বিনা পয়সায় দেশের জন্য, দেশের ভালোর জন্য লবি করে।
তিনি বলেন, বিএনপি কত নিচে নামতে পারে তার একটি উদাহরণ দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র শেখ সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিবারকে তারা কিডন্যাপ করতে চেয়েছিল। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় আগামী দুই বছর এ রকম আরও অনেক ষড়যন্ত্র হবে। এজন্য আমাদের বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সদস্যদের সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম ঠান্ডু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক।