আফগানিস্তানের ব্যাপারে মার্কিননীতির তীব্র সমালোচনা করলেন ইমরান খান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আফগানিস্তানে মার্কিন কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, আমেরিকার সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধে কোনও ফল হয়নি বরং বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের আরও বিস্তার ঘটেছে।

বহু বছর ধরে আফগানিস্তানের যুদ্ধে পাকিস্তান ছিল আমেরিকার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র। ওই যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে ইমরান খান বলেছেন, ‘আমাদের জনগণ আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং তারা মনে করে কাবুলের বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। কেননা তালেবানের সঙ্গে বোঝাপড়া ছাড়া ভিন্ন কোনও পথ নেই’। পাক প্রধানমন্ত্রী তালেবানের প্রতি পাকিস্তানের সর্বাত্মক সাহায্য সমর্থনের কারণ উল্লেখ না করে বলেছেন, আজ হোক কাল হোক আন্তর্জাতিক সমাজকে আফগানিস্তানের তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দিতে হবে। কেননা এর সঙ্গে চার কোটি আফগান নাগরিকের ভবিষ্যৎ জড়িত রয়েছে। বর্তমানে আফগানিস্তান ভয়াবহ মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তের রয়েছে।

সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে গত দুই দশকে মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে ব্যাপক তাণ্ডব ও ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে কোনও সাফল্য আসেনি। ২০১৮ সালে তেথরিকে ইনসাফ দল ক্ষমতায় আসার আগে এ দলের প্রধান ইমরান খান আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের বিরোধিতা করার পাশাপাশি পাকিস্তানের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় মার্কিন দ্রোণ হামলার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর প্রায় চার বছর অতিক্রান্ত হতে চললও। তিনি বহুবার আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদ দমন ইস্যুতে মার্কিন নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। কেননা এতে করে কেবল এ অঞ্চলসহ সারা বিশ্বে উগ্রপন্থার বিস্তার ঘটছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর গত আগস্টে তালেবানের কাবুল দখলের ঘটনা থেকে বোঝা যায় আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদ দমন করতে তো পারেনি বরং বিশ্বব্যাপী এসবের বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে। কারণ দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে আমেরিকার উপস্থিতির ফলে দায়েশ বা আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছে, মাদক চাষ ও উৎপাদন কয়েক গুণ বেড়েছে, এবং তালেবানের বিরুদ্ধে মার্কিন হামলার সময় সাধারণ আফগান নাগরিকরাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।

যাইহোক, দুই দশকের জবর দখলের পর মার্কিনীরা এটা উপলব্ধি করতে পারে যে বল প্রয়োগ করে কিংবা কেবল অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে তালেবানকে আত্ম সমর্পণে বাধ্য করা যাবে না এবং যুদ্ধেরও অবসান ঘটবে না। শেষ পর্যন্ত মার্কিন কর্মকর্তারা ২০২০ সালে তালেবানের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার বিষয়ে চুক্তিতে সই করে যাতে সন্ত্রাস বিরোধী কথিত যুদ্ধের চোরাবালি থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারে।

এ অবস্থায় আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধে মার্কিন ব্যর্থতার বিষয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, হোয়াইট হাউজকে অবশই বাস্তবতা মেনে নেয়া উচিত। তিনি তালেবান শাসনকে স্বীকৃতি দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা এ বিষয়টিকে উপেক্ষা করতে পারে না। একই সঙ্গে তিনি আমেরিকায় আটকে পড়া পাকিস্তানের অর্থ ছাড় দেয়ারও আহ্বান জানান।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

নির্বাচন তুরস্কে জাগরণের সৃষ্টি করবে

নূর নিউজ

ইউক্রেনে একদিনেই রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া ৫ কর্মকর্তা নিহত

নূর নিউজ

ভিসার নিয়মে যে পরিবর্তন আনল সংযুক্ত আরব আমিরাত

নূর নিউজ