বয়স ১১০, তবুও কুরআন পড়তে চশমার প্রয়োজন পরে না নুরুন্নবীর

ভোটার আইডি কার্ডের হিসাব অনুযায়ী বয়স ১১০। কিন্তু এলাকার অনেকের দাবি, তার বয়স আরও বেশি। এই বয়সেও নিজে হেঁটে মসজিদে যান। নিয়মিত নামাজ পড়েন, কোরআন তেলাওয়াতও করেন। তবে অবাক করার বিষয়, শতবর্ষী এই বৃদ্ধ এখনো খালি চোখে সব কিছু স্পষ্ট দেখতে এবং পড়তে পারেন। বছরের পর বছর ধরে চশমা ছাড়াই খালি চোখে তেলাওয়াত করে আসছেন পবিত্র কোরআনের আয়াত।

বলছি নুরন্নবী মিয়ার কথা। তিনি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছের কসাইটারী ডাক্তারপাড়া গ্রামের মৃত নজর উদ্দিন কাগজিয়ার ছেলে।

নুরন্নবী মিয়ার সমবয়সী ওই এলাকাতে আর কেউ বেঁচে নেই। তার চেয়ে বয়সে যারা ৩০-৪০ বছরের ছোট, তাদের অনেকের চোখেই চশমা। তাদের কেউ কেউ আবার পত্রিকা, বই পড়া তো দূরের কথা, চোখে চশমা দিয়েও চলাফেরা করতে পারেন না। অথচ এখনো তিনি চশমা ছাড়াই খালি চোখে পবিত্র কোরআন শরীফ পড়তে পারেন।

জানা গেছে, নুরন্নবী মিয়া ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তানি শোষণ আর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম দেখেছেন। বয়সের ভারে শত বছরের অনেক স্মৃতিই এখন তিনি ভালো করে বলতে পারেন না। কিন্তু ভেজালমুক্ত ভালো খাবার খেতে পারলে ভবিষ্যৎ ভালো বলে জানান শতবর্ষী এই বৃদ্ধ।

তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নুরন্নবী মিয়া ছোটবেলা থেকেই হেঁটে হেঁটে চারদিক ছুটে বেড়িয়েছেন। যুবক বয়সে ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে বেশির ভাগ সময় বিভিন্ন জায়গায় হেঁটে যাতায়াত করেছেন।

নুরন্নবী মিয়া বলেন, যুবক বয়সে যেসব খাবার খেয়েছি, তার সবই ছিল ভেজালমুক্ত। নিজেদের বাড়ির গরুর দুধ, ডিম, খেতের শাক-সবজি, পুকুরের মাছ, সরিষার তেল, ঢেঁকি ছাটা চালের ভাত কত স্বাদ ছিল। সব খাবার ছিল একদম নির্ভেজাল। আর এখন সবই ভেজাল।

তিনি বলেন, এখন মানুষের মধ্যে ভেজাল, খাবারে ভেজাল, ওষুধে ভেজাল, আমাদের চারপাশটাই যেন ভেজালে পরিণত হয়েছে। এ কারণে মানুষের রোগবালাইও কমছে না। অথচ এই বয়সেও আমার কোনো অসুখ-বিসুখ নেই। আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। মাঝে মধ্যে একটু জ্বর-সর্দি হয়। এছাড়া তেমন বড় কোনো সমস্যা হয়নি।

সম্প্রতি তিনি রিকশা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। ওই দুর্ঘটনায় নাকে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কিছু দিন তার কষ্টও হয়েছে। তবে এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ বলেও জানান।

নুরন্নবী মিয়া বলেন, এখন তো ৬০ বছর বয়স হলেই আমাদের দেশের মানুষ মৃত্যুর প্রহর গুনতে শুরু করে। শুরু হয় নানা রোগবালাই। অনেকে হাঁটতেও পারেন না। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি এখনও প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়ি। ভোর থেকে খালি চোখেই পবিত্র কোরআনও পড়ে থাকি। কোরআন তেলাওয়াতের কারণে আল্লাহ আমাকে এখনও খালি চোখে সব কিছু দেখার শক্তি দিয়েছেন। আমার চোখে কোনো সমস্যা নেই। শুধু কানে একটু কম শুনতে পাই।

ব্যক্তি জীবনে নুরন্নবী মিয়া ছয় ছেলে ও চার মেয়ের জনক। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম ১৯১০ সালের ২১ নভেম্বর। তবে স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, নুরন্নবী মিয়ার বয়স ১১৫-১২০ বছর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও বয়স নিয়ে নুরন্নবী নিজে কোনো মন্তব্য করেননি।

নুরন্নবী মিয়ার ভাতিজা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, আমার বড় বাবার বয়সী কোনো মানুষ আর হারাগাছে নেই। এই বয়সেও আমার জেঠা খালি চোখে কোরআন শরীফ নিয়মিত পড়ছেন, এটা একটা দৃষ্টান্ত। তার চলাফেরায় রয়েছে বেশ সতেজতা। তিনি শতবর্ষী হলেও এখনো বেশ সচেতন। মানুষের কল্যাণে সব সময় আল্লাহর কাছে কান্না করেন। তার মতো মানুষের জন্য হারাগাছের মানুষ গর্ববোধ করেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

করোনা সহজে যাবে না, সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের

আনসারুল হক

বরিশালে আশাবাদী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ?

নূর নিউজ

বিশ্ব ইজতেমায় কে কখন বয়ান করবেন, জেনে নিন পূর্ণাঙ্গ বয়ানসূচী

নূর নিউজ