কানাঘুষা ইসলামে নিষিদ্ধ

একটি সমাজে মানুষ সুন্দরভাবে যেন বাস করতে পারে, সে জন্য ইসলাম মানুষের ছোট-বড় সব বিষয়েই শিক্ষা দিয়েছে। বিশৃঙ্খলা, অনৈতিকতা ও অরাজকতার সূত্রপাত যাতে না হয়, সে জন্য শুরু থেকেই এসব দরজা বন্ধ করে দিয়েছে ইসলাম। আর এসব ইসলামী জীবনযাপনের মধ্যেই আছে মুসলমানের জন্য সমূহ কল্যাণ।

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিষ্টাচার হলো, একজনকে একা বসিয়ে বাকিরা আলাদা বসে কানে কানে কথা বলা উচিত নয়।

এর কারণে তৃতীয় ব্যক্তি নিজেকে অবহেলিত মনে করতে পারে। বা এভাবে অন্যদের আলাপে তার অন্তর ব্যথিত হতে পারে। সেই তৃতীয় ব্যক্তি তাদের ব্যাপারে নানা ধারণা করে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে পারে, এর ওপর ভিত্তি করে তাদের মধ্যে ঘৃণা ও ক্রোধ ধীরে ধীরে বাড়বে; আর একসময় সেই ক্ষোভ বিস্ফোরিত হতে পারে। এ জন্য রাসুল (সা.) কেউ যেন এমনটা না করে সে ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন। আর এটাকে হালকা ও সাধারণ মনে করারও অবকাশ নেই। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা তিনজন হবে, তখন দুজন আর একজনকে বাদ দিয়ে দুজনে চুপিচুপি কথা বলবে না, যে পর্যন্ত না অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মিশে যাও—এ কারণে যে তাহলে তাকে দুর্ভাবনায় ফেলে দেবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৫৮৯)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কেননা এটা তাকে চিন্তিত করে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৮২৫)

সাহাবায়ে কেরাম রাসুলের এই আদেশ যেন অমান্যকারী না হন, সে জন্য কী পন্থা অবলম্বন করেছেন তার বর্ণনা এসেছে এই হাদিসে। আবদুল্লাহ ইবনে দিনার (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) খালিদ ইবনে উকবা (রা.)-এর সেই ঘরের কাছে ছিলাম, যা বাজারে অবস্থিত ছিল। ইত্যবসরে এক ব্যক্তি এসে তাঁর সঙ্গে কানে কানে কিছু কথা বলতে ইচ্ছা করল। আবদুল্লাহ (ইবনে ওমর)-এর সঙ্গে আমি ও ওই ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ ছিল না। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) অন্য এক ব্যক্তিকে ডেকে নিলেন। এখন আমরা চারজন হলাম এবং তিনি আমাকে ও সেই ব্যক্তিকে একটু সরে যেতে বললেন, যাকে ডেকে নিয়েছিলেন এবং বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, দুজন একজনকে একা ছেড়ে কানে কানে কথা বলবে না (এতে তৃতীয় ব্যক্তি দুঃখিত হয়)। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হাদিস : ১৭৯৭)

পরস্পর দূরত্ব ও মনোমালিন্য ঘোচাতে এবং নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ও সামাজিক বন্ধন অটুট রাখতে রাসুল (সা.) এই ছোট বিষয়গুলো (যা অনেকের দৃষ্টিতে সাধারণ মনে হতে পারে) আমাদের বলে গেছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের রাসুল (সা.)-এর আদর্শ মোতাবেক চলার তাওফিক দান করুন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

নবিজির দাম্পত্য জীবন

নূর নিউজ

যে দুটি অঙ্গ হেফাজতে জান্নাতের নিশ্চয়তা

নূর নিউজ

রমজানের শিক্ষা পুরো বছর কাজে লাগানোর উপায়

নূর নিউজ