তুরস্কের দূতাবাসের কাছে কুরআন পোড়ানো ও বিক্ষোভের ঘটনায় এবার সংকটের মুখে সুইডেন। এ ঘটনা কেন্দ্র করে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে দেশটির অন্তর্ভুক্তি নিয়ে নতুন সংশয় দেখা দিয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, এ ঘটনার পর ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তুরস্কের সমর্থন আশা করা সুইডেনের জন্য আর উচিত হবে না।
তিনি বলেন, আপনারা যদি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য ও ইসলামের শত্রুদের এত ভালোবাসেন, তা হলে দেশের নিরাপত্তার জন্যও তাদের কাছেই সমর্থন চান।
এখন জানা যাচ্ছে, সেদিনের ওই ঘটনায় অর্থ দিয়েছেন এমন একজন উগ্রপন্থি সাংবাদিক, রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন সমর্থিত মিডিয়ার সঙ্গে যার সংযোগ রয়েছে।
স্টকহোমে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে কুরআন পোড়ানোর কাজটি করেছিলেন ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের নেতা রাসমুস পালুদান। এর আগে গত বছরের এপ্রিলে পবিত্র রমজান মাসে পালুদানের কুরআন পোড়ানোর ঘোষণা কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়। সর্বশেষ গত ২১ জানুয়ারি পুলিশি নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যেই তুরস্কের দূতাবাসের সামনে একটি লাইটার দিয়ে কুরআন শরিফে অগ্নিসংযোগ করে পালুদান। তাৎক্ষণিকভাবে এক বিবৃতিতে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানায় তুরস্ক।
এতে বলা হয়, ‘আমরা আমাদের পবিত্র গ্রন্থের ওপর জঘন্য হামলার ঘটনায় সবচেয়ে কঠিন ভাষায় নিন্দা জানাই। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে এই ইসলামবিদ্বেষী কাজের অনুমতি দেওয়া সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।’
এ বিষয় সুইডিশ মিডিয়া বলছে, ওই বিক্ষোভের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছিলেন রাসমুস পালুদান। এজন্য তাকে যে ৩১ ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল সেটি দিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটি-এর সাবেক কন্ট্রিবিউটর চ্যাং ফ্রিক। তিনি নিজেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, কাউকে কুরআন পোড়াতে বলেননি তিনি।
কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিক্ষোভের অনুমতি নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সামনে এভাবে কুরআন পোড়ানোর ঘটনা বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে। অন্যদিকে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
সুইডেনের এই ঘটনার পর রুশ সংবাদমাধ্যম রাশিয়া টুডের সঙ্গে কাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন চ্যাং ফ্রিক নামের ওই সাংবাদিক। ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে মস্কোর প্রতি তার কোনও সমর্থন নেই বলেও জানান তিনি। তবে ২০১৯ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। এ সময় রুশ মুদ্রা রুবলের একটি বান্ডেল বের করে তিনি বলেন, ‘এই হলেন আমার আসল বস! এটি পুতিন!’
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আল জাজিরা।