যানবাহনে কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে?

কোরআন তেলাওয়াত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হাদিসে এর অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তেলাওয়াত করল তার বিনিময়ে সে একটি নেকী পাবে, আর একটি নেকীর বদলা হবে দশগুণ, একথা বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম, একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)

এছাড়াও আরেক হাদিসে হজরত আবু মুসা আল-আশ‘আরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে তার উদাহরণ হলো লেবুর মত তার স্বাদও ভাল আবার ঘ্রাণও ভাল। মুমিনের উদাহরণ হলো খেজুরের ন্যায়, তার স্বাদ ভাল কিন্তু কোনো ঘ্রাণ নেই, আর কোরআন তেলাওয়াতকারী পাপী ব্যক্তির উদাহরণ হলো ফুলের মতো ঘ্রাণ ভাল কিন্ত স্বাদ তিক্ত, আর কোরআন তেলাওয়াত নাকারী হাফেজের উদাহরণ হলো মাকাল ফলের মতো যার স্বাদ তিক্ত এবং সু-গন্ধ নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৫৬০)

মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অবস্থাতে কোরআন তেলাওয়াত করে থাকেন। কোরআন তেলাওয়াতের স্থান নিয়ে অনেকের মনে নানান প্রশ্ন রয়েছে যে, রিকশা বা যানবাহনে বসে কোরআন তেলাওয়াত করা যায় কিনা বা এ বিষয়ে ধর্মীয় বিধান কী?

এ বিষয়ে আলেমদের মতামত হলো- রিকশা বা যানবাহনে বসে কোরআন তেলাওয়াত করা যায়। এটা দোষের কিছু নয়। বরং অনেক সময় গাড়ীতে গানবাদ্য বাজানো হয়, তাই এসব থেকে বাঁচার জন্য কোরআন তেলাওয়াত, জিকিরে মশগুল থাকা দোষণীয় নয়। বরং এমনটি করাই উত্তম হবে। এতে কোরআন বা জিকিরের কোনো অসম্মান হবে না।

এ বিষয়ে দেশের উচ্চতর ফতোয়া ও হাদিস গবেষণা বিভাগের মারকাজুদ্দাওয়া আল ইসলামিয়ার শিক্ষাসচিব মাওলানা আব্দুল মালেক তার প্রচলিত ভুল বইয়ে একটি ঘটনা উল্লেখ করে বলেছেন, আমাদের একজন বড় বুযুর্গ ব্যক্তির মুখে তার নিজের এই ঘটনা কয়েকবার শুনেছি যে, একবার তিনি রিকশায় চড়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। চালক তার আচরণে অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিল।

রিকশা থেকে নেমে বিদায়ের সময় চালক বলল, আপনার ব্যবহার আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তবে একটি কাজ আপনি ঠিক করেননি। তা হচ্ছে, আপনি রিকশায় বসে বসে কোরআন শরীফ পড়েছেন। এটা ঠিক না!

এ ঘটনা উল্লেখ করে মাওলানা আব্দুল মালেক বলেন, এটা ওই রিক্সাচালকের ভুল ধারণা। কারণ চলাফেরা, ওঠা-বসা, শয়ন-জাগরণ সর্বাবস্থায় জিকর করতে ও কোরআন তেলাওয়াতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আর সর্বোত্তম জিকর হচ্ছে, কোরআন মাজিদ তেলাওয়াত। -( আল কাউসার, প্রচলিত ভুল ০৬)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল হোক, যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে, সৎ কাজের আদেশ করে এবং অসৎ কাজ হতে নিষেধ করে আর এরাই সফলকাম।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৪)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

ইকামত ছাড়া ফরজ নামাজ পড়ে ফেলার বিধান

নূর নিউজ

তাহাজ্জুদের নামাজের সময় কখন

নূর নিউজ

কোন সদকার সওয়াব বেশি?

নূর নিউজ