পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে বিশেষ ব্যবস্থায় দ্রব্যমূল্য সহনীয় মাত্রায় রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে গাজীপুর জেলার চান্দনা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, রমজান মাস আসছে, এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি, রমজানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় দ্রব্যমূল্য সহনীয় মাত্রায় রাখতে। মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে। দেশের মানুষ যেন সুন্দরভাবে রোজা রেখে ইবাদত করতে পারে। সরকারকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ কষ্টে আছে। পরিবার ভিত্তিক রেশনিং ব্যবস্থা চালু করুন। অতিদরিদ্র, দরিদ্র, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত অনুযায়ী রেশন কার্ড দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয়পণ্য কম মূল্যে মানুষের মাঝে বিতরণ করতে হবে। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম যেন না বাড়ে না সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। দুর্নীতি মুক্তভাবে দায়িত্ব পালন করলে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কেউ বাড়াতে পারবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কম মূল্যে দিতে পারলেই মানুষ বাঁচবে।
হজ প্যাকেজ সম্পর্কে তিনি বলেন, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার মানুষ হজ করতে পারবেন। তিনবার সময় বাড়িয়েও এখন পর্যন্ত ১ লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছেন। এখনও ২৭ হাজার কোটা বাকি আছে। হজ প্যাকেজের দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা করা হয়েছে। এটা দেশের মানুষের জন্য অসম্ভব। হজের খরচ কমাতে ভর্তুকি দিতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে হজের খরচ কোথাও আমাদের চেয়ে অর্ধেক আবার কোথাও অর্ধেকের কম। বাংলাদেশ থেকে কেন হজে যেতে এত টাকা খরচ হবে?
ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি হিসেবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ শতকরা ৮ ভাগ। অথচ আন্তর্জাতিক মনিটরিং সংস্থাগুলো বলছে- বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ শতকরা ২৫ ভাগ। সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে বিদ্যুত খাতে বছরে ১ বিলিয়ন ডলার লস হচ্ছে। মেগা প্রকল্পে যে খরচ হয়েছে তার দায়ভার এখন সাধারণ মানুষের ওপর পড়েছে। দেশ থেকে দেদারছে অর্থ পাচার হচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, সরকারের হাতে টাকা নেই, এলসি খুলতে পারছে না। রিজার্ভ নেই। রিজার্ভের টাকা অন্যখাতে খরচ করা হয়েছে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। রিজার্ভের অর্থ বিদেশিদের ধার দিয়েছে, বিমানে ও পায়রা বন্দরে খরচ করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে রিজার্ভের ৮ বিলিয়ন খরচ করা হয়েছে। নিত্যপণ্য, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানির জন্য এলসি খোলা যাচ্ছে না। এ কারণে চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্য সরবরাহ কম। সকল জিনিসের দাম বেশি আর রিজার্ভের বর্তমান পরিস্থিতিও অস্বাভাবিক। রিজার্ভে যে টাকা আছে, সরকারের দেনা তার চেয়ে বেশি। দেনা পরিশোধ করলে রিজার্ভে কোনো টাকা থাকবে না।