মহানবী (সা.) যেভাবে পোশাক পরতে বলেছেন

উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত. তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পোশাক হিসেবে ‘কামীস’ বা জামা সবথেকে বেশি পছন্দ করতেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস, ৪০২৭)

বিভিন্ন হাদীসের ভিত্তিতে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন ধরনের জামা পরিধান করতেন। তার কোনটির দৈর্ঘ্য ছিল টাখনু পর্যন্ত। কোনটি কিছুটা ছোট, যেগুলো হাটুর নিচ পর্যন্ত ছিল। আবার কোনটির হাতা ছিল হাতের আঙ্গুলের প্রান্ত পর্যন্ত লম্বা। কোনটির হাতা কিছুটা ছোট, যা কব্জি পর্যন্ত ছিল।

পুরুষের পোশাক পরিধানের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বিশেষ দিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। তিনি পুরুষের পোশাকের নিচের অংশ পায়ের গোড়ালী থেকে উপরে রাখার আদেশ করেছেন এবং গোড়ালীর নিচে পাজামা, লুঙ্গি, জামা বা কোন পোশাক পরিধান করতে হারাম ঘোষণা করেছেন।

সবসময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের লুঙ্গি ও জামা টাখনুর উপরে থাকত। সাধারণত তিনি পোশাকের নিচের অংশ হাটু ও গোড়ালীর বরাবর বা নিসফে সাক পর্যন্ত পরিধান করতেন।

বিভিন্ন হাদীসে তিনি মুসলিম উম্মাহর পুরুষদের এভাবে পোশাক পরার আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং মুসলিম পুরুষের জন্য স্বেচ্ছায় টাখনুর নিচে পোশাক পরা হারাম।

আবু হুরায়রা, আবদুল্লাহ ইবনে উমর ও অন্যান্য সাহাবীদের বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যাক্তি দাম্ভিকতার সাথে নিজের পোশাক ঝুলিয়ে পরিধান করবে , আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। (সহীহ বুখারী, হাদিস, ৩৬৬৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস, ৫৫৭৮)

মূল কথা হলো পোশাক-পরিচ্ছদ এমন হতে হবে, যা পুরো সতর আবৃত করে। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর পুরো শরীর সতর। পোশাকের মূল উদ্দেশ্যই সতর ঢাকা। পোশাক প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে। ’ (সুরা: আরাফ, আয়াত: ২৬)

অন্য সব বিষয়ের মতো পোশাক-পরিচ্ছদেও কৃপণতা এড়িয়ে চলা উচিত। সামর্থ্য থাকার পরও কেউ যদি কৃপণতা করে নিম্নমানের পোশাক পরিধান করে ইসলামে তাদের অপছন্দ করা হয়েছে। একবার আবুল আহওয়াসের পিতা মালিক বিন আউফ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এলেন। তখন তাঁর পরনে ছিল অতি নিম্নমানের পোশাক। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি সম্পদ আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, কী সম্পদ আছে? আমি বললাম, সব ধরনের সম্পদই আল্লাহ আমাকে দান করেছেন। উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, গোলাম ইত্যাদি। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, ‘যখন আল্লাহ তাআলা তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন তখন তোমার ওপর তাঁর নিয়ামতের ছাপ থাকা চাই। ’ (নাসাঈ, হাদিস: ৫২৯৪)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

প্রতিদিন যে ৫টি সুরা পড়লে বিশেষ সওয়াব পাবেন

নূর নিউজ

মুখে খাবার রেখে কোরআন তিলাওয়াত করা যাবে?

নূর নিউজ

সন্তানের উত্তম শিষ্টাচারে মহানবীর শিক্ষা

নূর নিউজ