প্রত্যেকেই নিজের ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করতে চায়। এজন্য সবাই শয়তানের কুমন্ত্রণা ও ধোঁকার বেড়াজাল ভেদ করে নিজের সাধ্যমতো ইবাদতের চেষ্টা চালিয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালার কাছাকাছি পৌঁছার অন্যতম মাধ্যম হলো রাত জেগে বা রাতের বেলার ইবাদত।
হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে অধিক পরিমাণে নামাজ পড়ে, দিনে তার চেহারা উজ্জ্বল হয়।’ (ইবনে মাজাহ)
আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হজরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম-এর মা তাকে বললেন, হে বৎস! তুমি রাতে অধিক ঘুমিও না। কেননা রাতের বেশি ঘুম মানুষকে কেয়ামতের দিন নিঃস্ব অবস্থায় ত্যাগ করে।’ (ইবনে মাজাহ)
মুমিনের রাতের ইবাদত নিয়ে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, তারা রাতের সামান্য অংশই ঘুমিয়ে কাটাতো। (সুরা যারিয়াত, আয়াত, ১৭)
এখানে মুমিন মুত্তাকীদের এই গুণ বর্ণনা করা হয়েছে যে, তারা আল্লাহ তা’আলার ইবাদতে রাত্রি অতিবাহিত করে, কম নিদ্রা যায় এবং অধিক জাগ্রত থাকে। যারা তাদের রাতসমূহ পাপ-পঙ্কিলতা ও অশ্লীল কাজ-কর্মে ডুবে থেকে কাটায় এবং তারপরও মাগফিরাত প্রার্থনা করার চিন্তাটুকু পর্যন্ত তাদের মনে জাগে না এরা তাদের শ্রেণীভুক্ত ছিল না।
উদাহরণ হিসেবে একটি হাদীসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘লোকদেরকে খাদ্য দান কর, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ, সালাম প্রচার কর এবং রাতে উঠে নামাজ পড়; যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে তোমরা নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসনাদ আহমাদ, ৫/৪৫১)
কোন কোন মুফাসসির বলেন, যে ব্যক্তি রাত্রির শুরুতে অথবা শেষে অথবা মধ্যস্থলে যেকোন অংশে ইবাদত করে সে এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণেই আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে সালাত পড়ে সে এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত।’ (আবু দাউদ: ১৩২২) ইমাম আবু জাফর বাকের রহ. বলেন, যে ব্যক্তি এশার সালাতের পূর্বে নিদ্ৰা যায় না, আয়াতে তাকেও বোঝানো হয়েছে। (ইবনে কাসীর, তাফসিরে মারিফুল কোরআন, ৮ম-খণ্ড, ১৫০)