ইসলামপূর্ব যুগেও অন্যান্য নবীর উম্মতরা কোরবানি করতেন। এর সূচনা হয়েছিল আদিপিতা হজরত আদম আলাইহিস সালামের দুই সন্তান হাবিল ও কাবিলের মাধ্যমে। তবে বর্তমান সমাজে প্রচলিত কোরবানি মূলত মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম খলিলুল্লাহ ও ইসমাঈল আলাইহিস সালামের অনুকরণে পালন করা হয়।
জায়েদ ইবনে আরকাম রা: বলেন, সাহাবায়ে কেরাম রাসূল সা:-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ, এই কোরবানি কী? রাসূল সা: উত্তরে বললেন, ‘এটি হলো তোমাদের পিতা ইবরাহিম আ:-এর সুন্নত তথা আদর্শ।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোরবানির দিন আদম সন্তান যে আমল করে তার মধ্যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল হলো কোরবানির পশুর রক্ত প্রবাহিত করা। কোরবানির পশু কিয়ামতের দিন তার শিং, নাড়িভুঁড়ি ও চুল-পশম নিয়ে উপস্থিত হবে। আর তার রক্ত জমিনে পতিত হওয়ার আগেই আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়। অতএব তোমরা আনন্দের সাথে তা পালন করো।’ (ইবন মাজাহ)
কোরবানি ওয়াজিব হয় কারো কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে। এই সম্পদ শুধু জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত থাকলেই কোরবানি ওয়াজিব হবে। এর ওপর জাকাতের মতো এক বছর অতিবাহিত হওয়া আবশ্যক নয়।
কোনও ব্যক্তি কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকার পর হঠাৎ যদি কোরবানির আগ মুহূর্তে বা কোরবানি দিনগুলোতে (১০ থেকে ১২ তারিখ) সেই ব্যক্তি সাময়িক ঋণগ্রস্ত হয়ে যায় তাহলে তার করণীয় বিষয়ে আলেমরা বলেন, যদি ঋণগ্রস্ত হওয়ার পর সেই ব্যক্তির এই পরিমাণ টাকা থাকে যার মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করে দিলেও তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
আর যদি ঋণ পরিশোধের পর তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ আর না থাকে, তাহলে তার উপর কোরবানি ওয়াজিব হবে না। -(বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২)