আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ২৫ দিন পর সৌদি আরব থেকে রাজশাহীর বাগমারার চার জনের লাশ দেশে পৌঁছেছে। সরকারি খরচে ও প্রচেষ্টায় তাদের লাশ দেশে পৌঁছেছে। তবে লাশের সঙ্গে কোনো কিছু দেওয়া হয়নি।
নিহতের স্বজনেরা জানান, বুধবার ভোরে তাদের লাশ সৌদি আরব থেকে ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছায়। সেখান থেকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশগুলো পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ গ্রামে নিয়ে আসা হয়।
গত ১৪ জুলাই সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ হতে ৩৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত হুফুফ শহরের আলআহসা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল সিটি (সানাইয়া জাদিদ) এলাকার একটি সোফা কারখানায় অগ্নি দুর্ঘটনায় ৯জন শ্রমিক মারা যান। তাদের মরদেহ হুফুফ কিং ফাহাদ হাসপাতালের মর্গে রাখা রয়েছে বলে বাংলাদেশের দূতাবাসের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
যাদের মধ্যে চার জনের বাড়ি বাগমারা উপজেলার ঝিকড়া ও যোগিপাড়া ইউনিয়নে। এরা হলেন ঝিকড়া ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামের রুবেল হোসাইন, সাজেদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম ওরফে রুবেল আলী এবং বড় মাধাই মুড়ি গ্রামের ফিরোজ আলী সরদার।
এদিকে লাশ দেশে আনার আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই রাজশাহী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর সরকারি খরচে লাশ দেশে আনার জন্য আবেদন করেন বলে জানান বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সুফিয়ান। এর প্রেক্ষিতে সরকারি ভাবে লাশ দেশে এনে পরিবারের কাছে পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে মোতাবেক লাশ চারটি দেশে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লাশের সঙ্গে থাকা নিহত রুবেল হোসাইনের বড়ভাই জাবেদ আলী শেখ বলেন, ভোরে তাদের কাছে লাশের কফিন হস্তান্তর করা হয়েছে। ভাড়া করা গাড়িতে করে লাশ দাফনের জন্য গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া লাশ দেশে আনা সম্ভব ছিল না বলে জানিয়েছেন। বেলা আড়াইটায় লাশ দাফন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। একই রকম তথ্য দিয়েছেন নিহত আরিফুল ইসলাম ওরফে রুবেল আলীর বাবা সাহাদাত হোসেন, নিহত সাজেদুল ইসলামের স্ত্রী রিপা বিবি ও নিহত ফিরোজ আলী সরদারের বাবা আনিছার রহমান সরদার। গ্রামের পারিবারিক কবরস্তানে লাশ দাফন করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এজন্য আজ সকালে কবর খনন করাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা।
স্বজনেরা বলেন, লাশের সঙ্গে কোনো মালামাল দেওয়া হয়নি। তাদের সৌদি আরবে যেসব মালামাল ছিল তা লাশের সঙ্গে আসেনি। শুধুমাত্র কফিন এসেছে। লাশ দাফনের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে।