আজ (৩ সেপ্টম্বর ২০২৩ ইং) রোজ মঙ্গলবার, সকাল ৮টায় নেত্রকোনা জেলার ঐতিহ্যবাহি দ্বীনি মারকায মিফতাহুল উলূম মাদরাসা মিলনায়তনে নেত্রকোনা জেলা কমিটি গঠন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ নেত্রকোনা জেলার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জামিয়া শাহিদিয়া ঝানজাইল দুর্গাপুর নেত্রকোনা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা জিয়া উদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব আল্লামা শাইখ মুহিউদ্দিন রাব্বানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহাসচিব আল্লামা শাইখ মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পবিত্র কোরআন শরিফের শতাধিক আয়াত, দুই শতাধিক হাদিস এবং ইজমাউল উম্মাহ’র দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ নবী তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। যারা মুহাম্মাদ সা. কে শেষ নবী মানে না, তারা সন্দেহ ছাড়া কাফের। কাদিয়ানিরা প্রিয় নবী সা. কে আখেরী নবী হিসেবে না মানার কারনে তারা কাফের। তাই তারা ‘নামাজ, আজান-ইকামত, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি ইসলামি পরিভাষা, মুসলমানদের কোনো কৃষ্টি কালচার ব্যবহার করতে পারবে না। মুসলমানদের সঙ্গে কাদিয়ানীদের বিয়ে হবে না। কাদিয়ানী মারা গেলে তার জানাজা পড়া যাবে না এবং মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। জাতীয় পরিচয়পত্রে এবং পাসপোর্টে তাদের ধর্মীয় পরিচয় কাদিয়ানী লেখতে হবে।
মহাসচিব আরো বলেন, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে তারা অমুসলিম ও সংখ্যালঘু হিসেবে থাকুক, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সরকারের কাছে এ দেশের উলামা মাশায়েখ ও ইসলামি জনতার প্রাণের দাবি হচ্ছে, কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের সব ধর্মীয় আস্তানা বাজেয়াপ্ত এবং প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে জনগণের ঈমান রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সুবহানী কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের অপতৎপরতার ব্যপারে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের সাবেক সভাপতি শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমাদ শফী রহ. এর দিক নির্দেশনা মূলক একটি চিঠি পাঠ করে বলেন, আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ এদেশে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবী আদায়ে প্রায় তিন যুগ ধরে কাজ করে আসছে। এই সংগঠনে দেশের প্রায় সকল শীর্ষ আকাবির উলামায়ে কেরাম কাজ করেছেন। উম্মাহ’র ঈমান রক্ষায় কাজ করা এই সংগঠন মুরুব্বিদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য আমানত। আমাদেরকে এই সংগঠনের ছায়তলে একতাবদ্ধ হয়ে খতমে নবুওয়তের ঈমান ও আক্বিদা হেফাজতে আমরণ কাজ করে যেতে হবে।
সভায় মাওলানা জিয়া উদ্দীনকে সভাপতি এবং হাফেজ মাওলানা দেলোওয়ারকে সেক্রেটারি করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট নেত্রকোনা জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এ সময় কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব মুফতী কামাল উদ্দিন এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা শিব্বির আহমাদ কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আশিকুল্লাহ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মঈনুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা তাহের কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, মাওলানা আসআদুর রহমান আকন্দ, মুফতী মামুনুর রশীদ, মুফতী আবুল কাসেম, মুফতী আব্দুল বারী, মাওলানা রেজাউল করীম, মাওলানা মফিজুর রহমান, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, মাওলানা ইউনুস মাওলানা হারুনুর রশীদ ফারুকী সহ স্থানীয় বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জিয়া উদ্দীন কেন্দ্রীয় অতিথিবৃন্দ ও উপস্থিত উলামায়ে কেরামদের প্রতি আন্তরিক মুবারকবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমরা কেন্দ্রের ঘোষিত সকল কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করে ঐক্যবদ্ধভাবে খতমে নবুওয়তের কাজ করবো এবং শেরপুরের সকল থানা ও ইউনিয়নে কমিটি গঠন করে শেরপুরকে কাদিয়ানী সম্প্রদায় মুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।