রোজায় সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে ইফতারের সময় আপনার অনেককিছু খেতে মন চাইতে পারে। কিন্তু মন চাইলেই কি সবকিছু খাওয়া যাবে? একদমই না। এর কারণ হলো, অনেক খাবারই থাকতে পারে, যেগুলো আপনার শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। বিশেষ করে সারাদিন পেট খালি থাকার পরে ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খেলে পেটের ভেতরের পরিবেশ অনেক বেশি খারাপ হয়ে যাবে। বিপাক, হজম থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে।
রোজায় অ্যাসিডিটি কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও বেশ পরিচিত। মূলত সাহরি ও ইফতারে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের কারণে এমনটা দেখা দেয়। রোজা সুস্থ থাকার জন্য আপনাকে সবার আগে খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে ইফতারের সময়টাতে। কারণ এসময় অনেক পদের মুখরোচক খাবার আপনার সামনে থাকতেই পারে। কিন্তু খেতে হবে শরীরের জন্য সহায়ক খাবার। চলুন জেনে নেওয়া যাক ইফতারে কোন খাবারগুলো আপনাকে স্বস্তি দেবে-
শরবত
কোনো কেমিক্যালযুক্ত শরবত নয়, বরং তাজা ফলের রসের শরবত খেতে পারেন ইফতারে। কারণ এ ধরনের শরবতই শরীরের জন্য উপকারী। তাই কেমিক্যালযুক্ত শরবত দেখতে বা খেতে যতই ভালোলাগুক, তা এড়িয়ে চলাই উত্তম হবে। ফলের রস খাওয়া সম্ভব না হলে লেবুর শরবত খেতে পারেন। এটিও বেশ প্রশান্তিদায়ক। যেহেতু গরম পড়তে শুরু করেছে তাই বেলের শরবতও খেতে পারেন। এটি আপনার পেট ভালো রাখতে কাজ করবে। তবে লেবুর শরবত একেবারে খালি পেটে খাবেন না। কারণ লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড খালি পেটে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ফল
ইফতারে ভাজাপোড়া নানা পদ দূরে সরিয়ে তার জায়গায় রাখুন নানা পদের ফল। দুই-তিন রকমের ফল কয়েক টুকরা করে রাখতে পারেন। এতে খাবারে একঘেয়েমি আসবে না। চাইলে ফল দিয়ে কাস্টার্ড তৈরি করেও খেতে পারেন। সারাদিন রোজা থাকার পর এ ধরনের খাবার আপনাকে প্রশান্তি দেবে। তবে টক জাতীয় ফল এসময় না খাওয়াই ভালো। এ ধরনের ফল খেতে পারেন রাতের খাবারের আধা ঘণ্টা পরে।
চিড়া
চিড়া একটি অবহেলিত অথচ পুষ্টিকর খাবার। নানা ধরনের আধুনিক খাবারের ভিড়ে এর কদর কবে থেকে যেন কমতে শুরু করেছে। অথচ আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য ইফতারে চিড়া রাখলে তা নানাভাবে উপকার করবে। চিড়ার শরবত ইফতারে অন্যরকম প্রশান্তি দিতে পারে। এছাড়া দই-চিড়া-কলা কিংবা চিড়া-নারিকেল-গুড় মিশিয়ে খেলেও তা সুস্বাদু লাগবে। সেইসঙ্গে সুস্থ থাকাও সহজ হবে।
সালাদ
ইফতারে আরেকটি স্বাস্থ্যকর খাবার হতে পারে সালাদ। এখন তো নানা স্বাদের সালাদের রেসিপি গুগল কিংবা ইউটিউব ঘাটলেই পাওয়া যায়। সেসব তৈরি করাও বেশ সহজ। কেবল কেটেকুটে মিশিয়ে নিলেই হলো। গতানুগতিক স্বাদে পরিবর্তন আনতে নতুন নতুন সালাদের পদ তৈরি করতে পারেন। ফ্রুট সালাদ, ক্যাশুনাট সালাদ, প্রন সালাদসহ নানা ধরনের সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন। এগুলো যেমন মুখরোচক তেমনই স্বাস্থ্যকর। তাই ইফতারে আপনার খাবারের তালিকায় সালাদ রাখুন।