কওমী মাদরাসার লাইব্রেরী

  • মুফতি সুলতান মাহমুদ

লাইব্রেরী ইসলামী ইতিহাসের একটি অবচ্ছেদ্য অংশ৷ বাগদাদের ঐতিহাসিক বাইতুল হিকমাহর কথা আমরা জানি৷ পৃথিবির সব জ্ঞান সেখানে অনুবাদ করে আরবীতে রুপান্তর করা হয়েছিল৷ হালাকু খাঁ তা ধংস করে দেয়৷ পৃথিবীর বিখ্যাত সব আলেমদের ব্যাক্তিগত লাইব্রেরীই ছিল বিশালায়তনের৷ দেওবন্দ নদওয়ার লাইব্রেরীও অনুপম৷ প্রতিটি কওমী মাদরাসায় তাই বিশালাকারের লাইব্রেরী আছে৷ কিন্তু মোবাইলের আগমনে লাইব্রেরী তার পূর্বের জৌলুস হারিয়েছে৷ বেশিরভাগ মাদরাসার কুতুবখানা এখন বছরে একবার খোলা হয়৷ দরসী কিতাব ও তার শরাহ শুরুহাত ছাড়া বৈচিত্রপূর্ন কিতাবাদিও নেই৷ ছাত্রদের মোতায়লার গরজও নেই৷ সবাই ছুটছে যেন কোন আলেয়ার পিছে৷ কিন্তু জ্ঞানের কেন্দ্রভূমি প্রতিটি কওমী মাদরাসায় সমৃদ্ধ কুতবখানা থাকা উচিৎ৷ দরসী কিতাবের বাইরে উপকারী বিষয়ের বইপত্রের সংগ্রহ থাকা উচিৎ৷ ছাত্রদের জন্য কুতুবখানা থাকবে সদা উন্মুক্ত৷ তবে কুতুবখানার নাযিমকেও হতে হবে যোগ্য৷

মালিবাগ জামিয়ায় এমন কুতুবখানা আমরা পেয়েছিলাম৷ তখন কুতুবখানার নাযেম ছিলেন জীবন্ত কিংবদন্তি মাওলানা আহমদ মায়মূন দা,বা,৷ হযরতের কিতাবি রুচি প্রবাদতূল্য৷ খুঁজে খুঁজে পৃথিবির অভিনব সব কিতাব জমা করেছিলেন৷ নানা ধরনের কিতাব তো পেতামই৷ সাথে পেতাম হুজুরের চিন্তাদর্শন৷ হুজুর একসময় কতৃপক্ষের কাছে সামান্য ভাতা বৃদ্ধির দাবী করেছিলেন৷ কতৃপক্ষ তার ভাতা বৃদ্ধি না করে এক অবুঝ মাওলানাকে কুতুবখানার দায়িত্ব দিল৷ হুজুর আমাকে বলেছিলেন ওরা আমাকে কদর করল না৷ অচিরেই বুঝবে৷ তাই হলো৷ কিছুদিনের মাঝেই কুতুবখানা উজার হয়ে গেল৷ কোকিল আর পেঁচার পার্থক্য যারা করতে পারে না তাদের বাগান উজার হওয়াই স্বাভাবিক৷ মালিবাগেই যদি এই অবস্থা হয় অন্য জায়গায় আর কি হবে? আহলে ইলম নেই যারা আছেন তাদের কদর নেই৷ সব জায়গায় একিই হালত৷ জাতি গঠনে কে কাজ করবে? আজ সব হযরতরা গলায় শান দিয়ে সুরের ঝংকার সৃষ্টি করছেন৷ মোটা হাদিয়া৷ গাড়ী বাড়ী৷ সাথে আল্লামা জাতির কান্ডারী উপাধি তো আছেই৷ কারণ তাদের আছে শুহরত, কাঁচাটাকা৷ সুরের জন্য কিতাব পড়তে হয়না৷ গলা শানালেই চলে৷ তাই কুতবখানার কি প্রয়োজন? জাতি তো লাইব্রেরী ছাড়াই তাদের কান্ডারী পেয়ে গেছে৷ বরবাদে গুলিস্তা কেঁ লিয়ে একহি উল্লু কাফি হ্যায়, গুলিস্তা কে হার শাখ পে উল্লু বেইঠে হে, তো আনজামে গুলিস্তা কা কেয়া হোগা৷
আবেগের রাজ্য থেকে বাস্তবতায় ফিরুন৷ আহলে ইলম রাজ্যের আসন্ন অধঃপতন রোধে সোচ্চার হোন৷

লেখক: সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া বলিয়ারপুর

এ জাতীয় আরো সংবাদ

রোহিঙ্গা সুন্দরী নারীরা জড়িয়ে পড়ছে যৌন পেশায়

নূর নিউজ

কাতার বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের খতিব বাংলাদেশের মুফতি মিনহাজ

নূর নিউজ

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা কি আদৌ কার্যকর হবে?

নূর নিউজ