সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। যার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ আছে তার জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। কোরবানির পর কোরবানির পশুর চামড়া ব্যবহারের নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে।
ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে কোরবানির চামড়া দান করা উত্তম। তবে কোরবানিদাতা চামড়া ব্যবহার করতে চাইলে তা পারবে। তাতে কোনো নিষেধ নাই।
কোরবানির চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে কোরবানিদাতা তা ব্যবহার করতে পারবেন। ইচ্ছা করলে প্রিয়জনকে তা উপহার হিসেবেও দিতে পারবে।
তবে কোরবানিদাতা যদি কোরবানির পশুর চামড়া দান করতে বা বিক্রি করতে চায়, তাহলে তা গরিব, ইয়াতিম, অসহায়দের দিতে হবে। কোরবানি দাতা নিজে চামড়ার মূল্য খরচ করতে পারবেন না। (ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৫৪)
আবার ইচ্ছা করলে তা সাদকাও করতে পারবে। যারা জাকাত ও ফিতরা পাওয়ার উপযুক্ত, শুধু তারাই কোরবানির চামড়ার অর্থ পাওয়ার হকদার।
তবে এর বাইরে অন্য কোনো কাজে কোরবানির চামড়ার টাকা ব্যবহার করা যাবে না। কেউ যদি মসজিদ নির্মাণের কাজে কোরবানির চামড়ার টাকা দান করতে চান তাহলে তা জায়েজ হবে না।
অনেক এলাকায় মসজিদ নিমার্ণের সময় মসজিদ কমিটি বা এলাকার লোকজন কোরবানির চামড়ার টাকা মসজিদে দান করতে চান। এমন একটি বিষয়ে জানতে চেয়ে একজন প্রশ্ন করেছেন—
`আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ প্রয়োজন। তাই মসজিদ কমিটি এ মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আমরা এবারের কোরবানিতে এলাকার মানুষকে অনুরোধ করব, সকলেই যেন তাদের কোরবানির পশুর চামড়ার পুরো না হলেও অন্তত অর্ধেক মূল্য যেন মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য দান করেন।
‘আমার জানার বিষয় হল, মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত কি সঠিক হয়েছে? চামড়ার মূল্য কি মসজিদ নির্মাণ কাজে লাগানো যাবে? শরীয়তের নির্দেশনা জানাতে অনুরোধ রইল’।
এ বিষয়ে ফেকাহবিদ আলেমদের মতামত হলো—
মসজিদ কমিটির এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। কোববানির পশুর চামড়ার মূল্য মসজিদে দান করা জায়েজ নয়। এ টাকা মসজিদ নির্মাণের জন্য ব্যয় করা কিংবা মসজিদের অন্য কোনো কাজে লাগানো নাজায়েজ।
কারণ কোরবানির পশুর চামড়ার টাকা গরীব-মিসকীনের হক। তা যাকাত গ্রহণের উপযুক্তদেরকেই দিতে হবে। আর মসজিদ মুসলমানদের স্বতঃস্ফূর্ত নফল দানের মাধ্যমেই নির্মাণ করতে হবে।
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৫৭)