প্রিয়নবী সা. যেভাবে দোয়া করতে পছন্দ করতেন

আল্লাহর কাছে দোয়া করা, চাওয়া, প্রার্থনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। দোয়া শুধু চাওয়ার মাধ্যম নয়, বরং রবের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার একটি উপায়। বান্দা যতবেশি আল্লাহর কাছে চাইবে আল্লাহ তাকে দান করবেন, অপূর্ণতা পূর্ণ করবেন, তৃপ্তি ও প্রাপ্তিতে ভরিয়ে দেবেন মন।

মানুষের অপূর্ণতার শেষ নেই। চেষ্টা করেও অনেক কিছুর পূর্ণতা করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় চেষ্টা করেও হতাশার দেখা মেলে। অথচ চেষ্টা ও আল্লাহর কাছে প্রাথর্না দুটিই একজন মুমিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মুমিন চেষ্টা করবে এবং দোয়া করবে, আল্লাহ তায়ালা পূর্ণতা দেবেন, এটাই মুমিনের জীবনের সৌন্দর্য।

কখনো আল্লাহর কাছে চাওয়া থেকে বিরত হওয়া উচিত না। মানুষ চাইতে লজ্জা পেলেও আল্লাহ তায়ালা দিতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করেন না। কোরআনের একাধিক জায়গায় তিনি তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে বলেছেন। পৃথিবীর সাধারণ নিয়মে একজন আরেকজনের কাছে চাইলে দাতার মাঝে বিরক্তি আসে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে দিতে ভালোবাসেন। এজন্য তিনি দিন-রাতের এমন কিছু মুহূর্ত রেখেছেন যখন বান্দা চাইলেই তিনি দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব’ (সূরা মুমিন, আয়াত : ৬০।)

মানুষের প্রয়োজনের শেষ নেই। আল্লাহ তায়ালার ভাণ্ডারেও কোনো কিছুর অভাব নেই। তিনি বান্দাকে দিতে ভালোবাসেন। শেষ রাতে মানুষকে চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে এক হাদিসে আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন—

‘আমাদের রব প্রতি রাতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন, যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে। তিনি বলেন—কে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দেব; কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৫)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসূল সা. বলেছেন, রাতে আল্লাহ তার দয়ার হাত প্রসারিত করেন যেন দিবসের অপরাধী তার কাছে তাওবা করে। এমনিভাবে দিনে তিনি তার হাত প্রসারিত করেন, যেন রাতের অপরাধী তাঁর কাছে তাওবা করে। এমনিভাবে দৈনন্দিন চলতে থাকবে পশ্চিম দিগন্ত থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। (মুসলিম, হাদিস : ৬৮৮২)

বিভিন্ন বিষয়ে চাওয়ার জন্য হাদিসে বিভিন্ন ধরনের দোয়া বর্ণিত হয়েছে। রাসূল সা. নিজেই দোয়ার পদ্ধতিগুলো সাহাবিদের শিখিয়েছেন। রাসূল সা. অল্প শব্দে বহুল অর্থবোধক দোয়অ পছন্দ করতেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

আম্মাজান হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন— ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অল্প শব্দে বহুল অর্থবোধক দুআ পছন্দ করতেন এবং তা ছাড়া অন্য দোয়া পরিহার করতেন।’ (আবূ দাউদ ১৪৮২, আহমাদ ২৭৬৫০, ২৭৬৪৯)

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অধিকাংশ দোয়া এই হত,

اَللهم آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً، وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً، وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুন্য়্যা হাসানাহ, অফিল আ-খিরাতে হাসানাহ, অক্বিনা আযাবান্নার।’

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দাও এবং পরকালেও কল্যাণ দাও। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৫২২, ৬৩৮৯, মুসলিম, হাদিস : ২৬৮৮, তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৮৩)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

ইসলাম ও বিজ্ঞানের আলোকে দুপুরের বিশ্রাম

নূর নিউজ

মক্তবে কুরআন শিখিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়ে দেওবন্দের ফতোয়া

নূর নিউজ

কসর পড়ে সময় থাকতেই এলাকায় ফিরলে পুরো নামাজ পড়তে হবে?

নূর নিউজ