একজন মুমিনের বড় দায়িত্বটি হলো সময়মতো নামাজ পড়া। এটি ফরজ দায়িত্ব। যেখানে যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন, সময়মতো নামাজ পড়তেই হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘…নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)
কোরআনের এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা নির্ধারিত সময়ে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আবার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উত্তম হলো আউয়াল ওয়াক্তে বা প্রথম ওয়াক্তে নামাজ পড়া। প্রত্যেক নামাজের মোট সময়ের প্রথম অর্ধাংশকে আউয়াল ওয়াক্ত বলা হয়।
আউয়াল ওয়াক্তে নামাজ আদায় করাকে রাসুলুল্লাহ (স.) সর্বোত্তম আমল হিসাবে অভিহিত করেছেন। (আবুদাউদ: ৪২৬; তিরমিজি১৭০)। আবার যখন লোকেরা জামাতে নামাজ দেরি করে পড়বে (অর্থাৎ প্রথম ওয়াক্তে পড়বে না), তখন একাকি নামাজ আদায় করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসলিম: ৬৪৮; নাসায়ি: ৮৫৯)
আয়েশা (রা.) বলেন, মহানবী (স.) শেষ জীবন পর্যন্ত দ্বিতীয়বার কখনও শেষ ওয়াক্তে সালাত আদায় করেননি। (তিরমিজি: ১৭৪)। এ থেকে আউয়াল ওয়াক্তের গুরুত্ব প্রমাণিত হয়।
আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত আলী রা.-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে আলী! ৩টি জিনিসের ক্ষেত্রে বিলম্ব করবে না। ১. নামাজের যখন সময় আসবে তখন নামাজ আদায় করা থেকে দেরি করবে না। ২. মৃত ব্যক্তির জানাজা যখন উপস্থিত হবে তখন কাফন-দাফন সম্পন্ন করতে দেরি করবে না। ৩. কোন অবিবাহিতা মেয়ের জন্য যখন কোন উপযুক্ত পাত্র পাবে তখন তাকে পাত্রস্থ করা থেকে বিলম্ব করবে না।’ -(তিরমিজি ১/২০৬)
অনেক সময় মানুষ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় ওয়াক্ত হওয়ার পরও নামাজ আদায়ে দেরি করে থাকে। এ কারণে প্রিয়নবী (স.) যথা সময়ে নামাজ আদায়ের ফজিলত ঘোষণা করেছেন। হাজারো কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও যেন মানুষ নামাজের আউয়াল ওয়াক্তের প্রতি যত্নবান হয়। একদিন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসুল (স.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর নিকট কোন কাজ অধিক পছন্দনীয়? তিনি বললেন, সময়মতো (প্রথম ওয়াক্তে) নামাজ আদায় করা। সময়মতো নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে যারা মসজিদে অপেক্ষায় থাকে, তাদের জন্য নামাজের সওয়াবই লেখা হয়।