আফগানিস্তান সঙ্কটকে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টে তীব্র সমালোচনার পর পদত্যাগ করেছেন ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগ্রিড কাগ। বৃহস্পতিবার ডাচ পার্লামেন্টে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপি অভিযোগ করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই সঙ্কটে উদ্ধার অভিযান ‘মিসহ্যান্ডেল’ বা ভুলভাবে করেছেন। পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন প্রেস অফিসার সিএনএন’কে এ কথা বলেছেন। গত ১৫ই আগস্ট তালেবানরা আফগানিস্তান পুরোপুরি দখলে নেয়ার পর লক্ষাধিক বিদেশি ও আফগানকে আকাশপথে কাবুল থেকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত এসব মানুষের বেশির ভাগই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু ঝুঁকিতে থাকা বহু সংখ্যক মানুষকে আফগানিস্তানে বিশৃংখল অবস্থায় ফেলে যায় তারা। ফলে সমালোচনা তীব্র হয়।
বলা হয়, পশ্চিমাদের জন্য গত দুটি দশক ধরে যারা কাজ করেছেন তাদেরকে ফেলে চলে গেছে ওইসব শক্তি। ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বুধবার আফগান সঙ্কট এবং উদ্ধার অভিযান নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মন্ত্রীপরিষদের নিন্দা জানিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব আনা হয়। প্রেস অফিসার বলেছেন, এমন খসড়া বা মোশন আনার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে পদত্যাগের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু সিগ্রিদ কাগ নিজের সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করেছেন। এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সিগ্রিদ কাগ। তিনি লিখেছেন, কাবুলে কি ঘটেছে সে বিষয়ে তিনি জানেন। কিন্তু পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের বিষয় তিনি মেনে নিয়েছেন। তিনি আরো লিখেছেন, পার্লামেন্ট দেখতে পেয়েছে যে, সরকার দায়িত্বহীনের মতো কাজ করেছে। যেহেতু উদ্ধার অভিযানের চূড়ান্ত দায়িত্ব আমার ওপর ছিল, আমি এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারিনি। তাই আমি পার্লামেন্ট যা অভিযোগ এনেছে তা মেনে নিচ্ছি। আমার মত হলো গণতন্ত্রে এবং আমাদের সরকারের সংস্কৃতিতে যখন একজন মন্ত্রীর নীতি প্রত্যাখ্যাত হয় তখন তার পদত্যাগ করা উচিত। আমাকে বাদ দিয়েও আফগানিস্তানে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। আমি এ বিষয়ে আশ্বস্ত যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্টাফরা তাদের চমৎকার কাজ চালিয়ে যাবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মতে, আগস্টের শেষ দুই সপ্তাহে প্রায় ২১০০ মানুষকে আফগানিস্তান থেকে ডাচ সামারিক বিমান উদ্ধার করে নিয়ে গেছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে। এর মধ্যে প্রায় ১৭০০ মানুষের চূড়ান্ত গন্তব্য হলো নেদারল্যান্ডস। কিন্তু কয়েক শত ডাচ নাগরিক, যাদের বেশির ভাগই আফগান বংশোদ্ভূত এবং অজ্ঞাত সংখ্যক আফগান, যারা পশ্চিমাদের সহযোগিতা করেছেন কাজে, তারা বিমানবন্দর থেকে নিরাপদে বিমানে উঠতে পারেননি।