আল জাজিরার কাছে ভূমিকম্পের ভয়াবহতা বর্ণনা করলো এক শিশু

গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ঘটে গেছে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্প। এ সময় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ছোট্ট শিশু শামস ওলিদের পরিবার। কিভাবে তার পরিবারে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, চোখে দেখা ওই দৃশ্যেরই বিবরণ তুলে ধরেছে শিশু শামস।

আল জাজিরা মুবাশিরের কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শিশু শামস জানায়, ‘ভূমিকম্পের সময় আমরা সবাই ঘুমিয়েছিলাম। পরে প্রবল প্রকম্পনে আব্বু-আম্মু জেগে উঠেন। তারা আমাদের ঘুম থেকে জাগিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললেন। আমরা তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়ি।’

‘গেটের কাছে পৌঁছলে মনে হলো, আমার মাথায় তো হিজাব নেই। তখন হিজাব আনার জন্য আমি ড্রেসিংরুমে ফিরে যাই। এ সময় আম্মুর মনে পড়ল, আমার ছোট বোন কামরায় রয়ে গেছে। তিনিও তাই দৌঁড়ে ঘরে ফিরে যান। আমরা যখন ঘরে প্রবেশ করলাম, হঠাৎ পুরো ভবন আমাদের উপর ভবন ভেঙে পড়ল।’

‘আমি আমার ড্রেসিংরুমে আটকে যাই। আম্মু ছোট বোনসহ অন্য কামরায় আটকা পড়েন। ওদিকে আব্বু ছোট ভাইসহ দরজায় অপেক্ষা করছিলেন। তিনিও সেখানে আটকা পড়েন।’

শামস বলে, যখন আমাদের এলাকায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়, আম্মু প্রথম উদ্ধারকর্মীদের মনোযোগ আকর্ষণে সমর্থ হন। তখন উদ্ধারকর্মীরা আম্মু ও ছোট বোনকে উদ্ধার করেন। পরে আম্মুর তথ্যের ভিত্তিতে তারা আমার পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।

“উদ্ধারকাজের আওয়াজ শুনে আব্বু আওয়াজ দিয়ে উঠেন। তিনিও উদ্ধারকর্মীদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন। আব্বুর আওয়াজে আমি আব্বুকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আব্বু, আমার মাথায় তো হিজাব নেই। এ অবস্থায় কি বের হতে পারব।’ তখন আব্বু উত্তর দিলেন, ‘আম্মু, বের হও। আল্লাহ তায়ালা এ ত্রুটি ক্ষমা করবেন’।”

পরে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার অব্যাহত প্রচেষ্টার পর উদ্ধারকর্মীরা আব্বুকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। তখন দেখা গেছে, আব্বুর মেরুদণ্ডের হাড় ও দুই পা ভেঙে গেছে। পরে বাবাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য পাশের তাঁবুতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরের ঘটনা আর আমরা জানি না।

উল্লেখ্য, শামস, তার মা ও ভান-বোন এখন সাময়িকভাবে ইস্তাম্বুলে তার মামা বাড়িতে আছে। তারা তাদের বাবার কাছে যেতে চায়।

সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির ও অন্যান্য

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে

নূর নিউজ

নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে ভারত সরকার

নূর নিউজ

এবার ইজতেমায় থাকবে সাইবার নিরাপত্তা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নূর নিউজ