ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে মাদ্রাসার সংখ্যা কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শনিবার (২১ জানুয়ারি) তিনি বলেছেন, সরকার রাজ্যে মাদ্রাসার সংখ্যা কমাতে এবং মাদ্রাসা ব্যবস্থার নিবন্ধন শুরু করতে চায়।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘আমরা প্রথম দফায় রাজ্যে মাদ্রাসার সংখ্যা কমাতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, আমরা মাদ্রাসায় সাধারণ শিক্ষা চালু করতে চাই এবং মাদ্রাসায় নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করতে চাই। সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করছে এবং তারা এতে সহায়তাও করছে।
তার দাবি, ‘আমরা এই বিষয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করছি এবং তারা আসাম সরকারকে এ বিষয়ে সাহায্যও করছে।’
এর আগে গত মঙ্গলবার আসামের পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি) ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত বলেছিলেন, রাজ্যের মাদ্রাসা ব্যবস্থায় সংস্কার আনার জন্য আলোচনা চলছে।
আর গত সোমবার গুয়াহাটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আসামের ডিজিপি বলেন, ‘আসামে মাদ্রাসাগুলো সঠিকভাবে চলছে। মাদ্রাসা চালাচ্ছেন এমন ৬৮ জনের সাথে আজ আমরা কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, তারা ছোট মাদ্রাসাগুলোকে বড় মাদ্রাসার সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
তার ভাষায়, ‘কীভাবে মাদ্রাসায় আরও সংস্কার আনা যায়, নিয়ম নির্ধারণ এবং বোর্ড গঠন করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা ছোট মাদ্রাসাগুলোকে বড় মাদ্রাসার সাথে একীভূত করার বিষয়েও কথা বলেছি।’
এ বিষয়ে জরিপ চালানো হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘প্রায় ১০০টি ছোট মাদ্রাসা বড় মাদ্রাসার সাথে একীভূত হয়েছে। এ বিষয়ে জরিপও করা হচ্ছে।’
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, মাদ্রাসায় যদি ভারতবিরোধী কাজকর্ম হয়, তাহলে তা ভেঙে দেওয়া হবে। মাদ্রাসা ভেঙে দেওয়ার কোনও ইচ্ছা সরকারের না থাকলেও জিহাদি কাজকর্মে কোনও প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করা হলে, তা ভেঙে দেওয়া হবে।
তার এই বক্তব্যের কয়েকদিন আগে আসামের বঙ্গাইগাঁওতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একটি মাদ্রাসা। ওই মাদ্রাসার বেশ কয়েকজন শিক্ষকের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে দাবি করে মাদ্রাসাটি ভেঙে দেওয়া হয়।
বঙ্গাইগাঁওতে ভেঙে দেওয়া মাদ্রাসাটির মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল সেসময় বলেন, এই মাদ্রাসায় দুঃস্থ শিশুদের পড়ানো হয়। মাদ্রাসাগুলো তৈরির জন্য ২০-৩০ বছর ধরে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অথচ সরকার একদিনেই তা গুঁড়িয়ে দিল।
তিনি আরও বলেছিলেন, আসামজুড়ে কয়েক লাখ স্কুল রয়েছে। সেই সমস্ত স্কুলগুলোতে যদি কেউ অপরাধ করেন, তাহলে শুধুমাত্র অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হয়। মাদ্রাসার ক্ষেত্রেও সেই একই আইন প্রযোজ্য হওয়া উচিত। যে বা যারা অপরাধী, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।