ইউক্রেনের আকাশে-বাতাসে ক্ষেপণাস্ত্রের কালো ধোঁয়ায় জনজীবনে ভয় আর আতঙ্কের এক মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে রাশিয়ার সামরিক হামলার পর সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারকল্পে প্রতিটি দেশের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে আকাশ পথে বিমান চলাচল বন্ধ করার পর থেকে আটকে পড়া বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের স্থলপথ হয়ে উঠেছে বেঁচে থাকার আশায় নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার অন্যতম মাধ্যম। এ নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার মানব শিবিরে বাংলাদেশিদের খুঁজ পাওয়া গেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আগে থেকেই তারা বুঝতে পেরেছিল রাশিয়া আক্রমণ করবে। তাই তারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুতি পূর্ব থেকেই গ্রহণ করে। এরই সুবাদে বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি দল ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে স্থলপথে ট্যাক্সি দিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর লবিবে আশ্রয় নেয়। কিন্তু পোল্যান্ড সীমান্ত প্রবেশ দরজার দূরত্ব থাকায় তারা সেখান থেকে হেঁটে পোল্যান্ডের সীমানার কাছা-কাছি চলে যায়। সেখানে শত শত যানবাহনে যানজটের সৃষ্টি হয়। পোল্যান্ডে প্রবেশের বিশ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট দেখা যায়। তাই আশ্রয় প্রার্থীরা উপায়ন্তর না পেয়ে হেঁটেই রওনা দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশিরা জানান, আমরা বাংলাদেশিরা স্থলপথে বিভিন্ন বাহনযাত্রায় অবশেষে পোল্যান্ডের সীমানার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি। এর সাথে বিভিন্ন দেশের নিরাপদ আশ্রয় প্রার্থীরা একই গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন। সারারাত আতঙ্কের মধ্যে কেটেছে। চারিদিকে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবারুদ, মর্টারশেলের শব্দ।
সত্যিকারভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতি বুঝতে হলে বাস্তবতার কোনো বিকল্প নেই। ভয় আর আতঙ্ক কী জিনিস আমরা বুঝতে পেরেছি। বরফ ঢাকা প্রান্তর আর ঠাণ্ডা দিয়ে আমরা হেঁটে এ পর্যন্ত এসেছি। পোল্যান্ডের সীমান্ত ইমিগ্রেশনের সামনে অনেক বাংলাদেশি ভিড় করেছেন।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাজার হাজার আশ্রয় প্রার্থী পোল্যান্ডের ইমিগ্রেশন জটিলতা অতিক্রম করছেন। এর মধ্যে এক বাংলাদেশির পাসপোর্ট কপি না থাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি পোল্যান্ড ইমিগ্রেশন বিভাগ। ইতোমধ্যে তারা আশ্রয় প্রার্থীর সঙ্গে নিজ দুই কপি ছবি বাধ্যতামূলকভাবে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।