ইবরাহিম আ.-কে যেসব পুরস্কার দিয়েছেন আল্লাহ

ইবরাহিম আ.-কে বলা হয় খলিলুল্লাহ। তিনি জীবনের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এই উধাধী লাভ করেছিলেন। তার জীবনের এই চড়াই-উৎড়াই সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে—

وَ اِذِ ابۡتَلٰۤی اِبۡرٰهٖمَ رَبُّهٗ بِكَلِمٰتٍ فَاَتَمَّهُنَّ ؕ قَالَ اِنِّیۡ جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ اِمَامًا ؕ قَالَ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِیۡ ؕ قَالَ لَا یَنَالُ عَهۡدِی الظّٰلِمِیۡنَ

আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীমকে তার রব কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর সে তা পূর্ণ করল। তিনি বললেন, ‘আমি তোমাকে মানুষের জন্য নেতা বানাব’। সে বলল, ‘আমার বংশধরদের থেকেও’? তিনি বললেন, ‘জালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না’। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৪)

আল্লাহ তায়ালা তাঁকে যেসব কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছিলেন তিনি সেসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আল্লাহ তায়ালা তাঁকে মানব জাতির নেতৃত্ব দান করেন। যেন মানুষ তাঁকে অনুসরণ ও অনুকরণ করতে পারে। ইবরাহিম আ. এই তাঁর পরবর্তী বংশধরদের মাঝেও অব্যাহত রাখার দোয়া করেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রার্থনা কবুল করেছিলেন এবং তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁকে যে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে তা জালিমরা লাভ করবে না, এটা শুধু সৎকর্মশীলদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—

وَ وَهَبۡنَا لَهٗۤ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ وَ جَعَلۡنَا فِیۡ ذُرِّیَّتِهِ النُّبُوَّۃَ وَ الۡكِتٰبَ وَ اٰتَیۡنٰهُ اَجۡرَهٗ فِی الدُّنۡیَا ۚ وَ اِنَّهٗ فِی الۡاٰخِرَۃِ لَمِنَ الصّٰلِحِیۡ

আর আমি ইবরাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব এবং তাঁর বংশধরদের জন্য স্থির করলাম নবুওয়ত ও কিতাব। আর আমি তাকে তার প্রতিদান দুনিয়ায় দিয়েছিলাম; এবং আখিরাতেও তিনি নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হবেন। (সূরা আনকাবুত, আয়াত : ২৭)

অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা ইবরাহিম আলাইহিস সালাম-এর আত্মত্যাগ ও অন্যান্য সৎকর্মের প্রতিদান দুনিয়াতেও দান করেছেন। তাঁকে মানুষের প্রিয় ও নেতা করেছেন। যারাই ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দাওয়াতকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিল তারা সবাই দুনিয়ার বুক থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং এমনভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেছে যে, আজ দুনিয়ার কোথাও তাদের কোন নাম নিশানাও নেই। কিন্তু যে ব্যক্তিকে আল্লাহর কালেমা বুলন্দ করার অপরাধে তারা জ্বলিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে চেয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত যাকে সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় স্বদেশভূমি ত্যাগ করতে হয়েছিল তাকে আল্লাহ এমন সফলতা দান করেন যে, দুনিয়াতে তাকে উত্তম স্বচ্ছন্দ রিজিক, প্রশস্ত আবাস, উত্তম নেককার স্ত্রী, সুপ্ৰশংসা প্ৰদান করা হয়েছে।

চার হাজার বছর থেকে দুনিয়ার বুকে ইবরাহিম আ.-এর নাম সমুজ্জ্বল রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। দুনিয়ার সকল মুসলিম, নাসারা ও ইয়াহুদী রাব্বুল আলমীনের সেই খলীল তথা বন্ধুকে একযোগে নিজেদের নেতা বলে স্বীকার করে।

একমাত্র সেই ব্যক্তি এবং তার সন্তানদের থেকেই তারা হিদায়াতের আলোকবর্তিকা লাভ করতে পেরেছে। আখেরাতে তিনি যে মহাপুরস্কার লাভ করবেন তাতো তার জন্য নির্ধারিত হয়েই আছে কিন্তু এ দুনিয়ায়ও তিনি যে মর্যাদা লাভ করেছেন তা দুনিয়ার বৈষয়িক স্বাৰ্থ উদ্ধার প্রচেষ্টায় জীবনপাতকারীদের একজনও আজ পর্যন্ত লাভ করতে পারেনি।

এ থেকে জানা গেল যে, কর্মের আসল প্রতিদান তো আখেরাতে পাওয়া যাবে, কিন্তু তার কিছু অংশ দুনিয়াতেও নগদ দেয়া হয়। অনেক নির্ভরযোগ্য হাদীসে অনেক সৎকর্মের পার্থিব উপকারিতা ও অসৎকর্মের পার্থিব অনিষ্ট বর্ণিত হয়েছে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম ও দোয়া

নূর নিউজ

একটা সময় মানুষ বিভিন্ন ধরনের পাত্র ব্যবহার করে ওজু করত।

নূর নিউজ

বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২২ হাজার ৮৩৩ হজযাত্রী মক্কায় পৌঁছেছেন

নূর নিউজ