হিজরতের ষষ্ঠ বছর নবীজি (সা.) স্বপ্নে দেখেন, তিনি সাহাবিদের নিয়ে ইহরাম বেঁধে ওমরাহর জন্য মক্কায় প্রবেশ করছেন। নবীদের স্বপ্ন সত্য। তাই সাহাবিরা স্বপ্নের কথা শুনে ওমরাহর জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন এবং সাহাবিদের আশা-আকাঙ্ক্ষা নবীজি (সা.)-কেও উদ্বুদ্ধ করে। ফলে তিনি জিলকদ মাসে ওমরাহর জন্য ইহরাম বেঁধে বের হলেন।
তাঁর সঙ্গে স্ত্রী উম্মে সালমা (রা.)-সহ এক হাজার ৪০০ সাহাবিও ওমরাহর জন্য বের হন। এ সময় তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে মদিনায় প্রশাসক নিয়োগ করেন। জুলহুলাইফায় পৌঁছে তিনি ইহরাম বাঁধেন এবং কোরবানির পশুগুলোর গলায় মালা পরান। কোরবানির জন্য তারা ৭০টি উট সঙ্গে নেন।
মুসলিম কাফেলার উদ্দেশ্য ছিল নির্বিঘ্নে ওমরাহ করে চলে আসা। নবীজি (সা.) ইহরাম বেঁধে মক্কার মুশরিকদের বার্তা দিতে চেয়েছিলেন যে তিনি কোনো ধরনের সংঘাত চান না। তারপরও তারা মুসলিম কাফেলাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিল। ফলে নবীজি (সা.) সাহাবিদের নিয়ে হুদাইবিয়ায় অবস্থান গ্রহণ করলেন।
বহু আলোচনার পর উভয় পক্ষ এ বিষয়ে একমত হলো যে মুসলিমরা এ বছর ওমরাহ না করে ফিরে যাবে এবং পরের বছর তিন দিনের জন্য মক্কায় প্রবেশের অনুমতি পাবে।
চুক্তি অনুযায়ী পরের বছর তথা সপ্তম হিজরির শেষ ভাগে মুসলিমরা আগের বছরের কাজা আদায় করেন। এটাই ছিল হিজরতের পর নবীজি (সা.)-এর প্রথম ওমরাহ।
ইতিহাসবেত্তারা এই ওমরাহকে ‘ওমরাতুল কাজা’ নামে উল্লেখ করেছেন। এই সফরে নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে দুই হাজার সাহাবি অংশ নেন। তাঁরা আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র সঙ্গে নেন। তবে কুরাইশ প্রতিনিধি মিকরাজ বিন হাফসের অনুরোধে অস্ত্র মক্কার বাইরে রেখে যান। মুসলিমরা মক্কায় অবস্থানের সময় নিকটবর্তী পাহাড়ের চূড়ায় সরে যান।