জম্মু-কাশ্মীরে বেসামরিক লোকজনের উপরে গেরিলা হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। বিশেষ অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীর জুড়ে ৫৭০ জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই যুবক।
আজ রোববার ‘আজতক’ জানিয়েছে, কাশ্মীর উপত্যকায় কিছু পাথর নিক্ষেপকারী এবং ভারতবিরোধী গোষ্ঠীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, শ্রীনগরে কমপক্ষে ৭০ জন যুবককে আটক করা হয়েছে। একসপ্তাহের মধ্যে ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তির হত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর উপত্যকায় অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরে এক সপ্তাহে ৫ জন নিরীহ নাগরিককে টার্গেট করে হত্যা করার পর দিল্লি থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ বিশেষজ্ঞদের কাশ্মীরে পাঠিয়েছে। এদিকে, কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী ‘সিআরপিএফ’-এর বিরুদ্ধেও একজন সাধারণ নাগরিকের জীবন কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
‘আজতক’ সূত্রে প্রকাশ, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নয়া অভিযান শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও কোভিড ঢেউয়ের সময় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকলেও এখন যারা নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে একটি বড়সড় অভিযান শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যানে প্রকাশ, চলতি বছর কাশ্মীরে কমপক্ষে ২৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এই ২৫ জনের মধ্যে ৩ জন ছিলেন অন্য জায়গার বাসিন্দা, ২ জন কাশ্মীরি পণ্ডিত এবং ১৮ জন মুসলিম। সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে শ্রীনগরে, যেখানে এ ধরনের ১০ টি ঘটনা ঘটেছে।
এরপরে পুলওয়ামা এবং অনন্তনাগে ৪ টি করে ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সেখানকার অমুসলিম সংখ্যালঘুরা কিছুটা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে এবং অভিবাসী নয় এমন কমপক্ষে ৫০/৬০ জন কাশ্মীরি পন্ডিত পরিবার আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে দক্ষিণ কাশ্মীর থেকে জম্মুতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সব পরিবারের অধিকাংশেরই জম্মুতে বাসস্থান রয়েছে।
এদিকে, গণমাধ্যমের বিভিন্ন সূত্র বলছে জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন ‘আইএএস’ কর্মকর্তা শাহ ফয়সালকে লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। শাহ ফয়সাল লেফটেন্যান্ট গভর্নর এবং প্রশাসনকে স্থানীয় বিষয়ে পরামর্শ দেবেন। তিনি জম্মু-কাশ্মীর ক্যাডারের একজন ‘আইএএস’ কর্মকর্তা ছিলেন। চাকরি ছেড়ে তিনি এক সময় জম্মু-কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট পার্টি গঠন করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি রাজনীতিকে বিদায় জানান