মসজিদে সবার আগে যাওয়া এবং প্রথম কাতারে নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। আল্লাহর রাসূল সা. প্রথম কাতারকে ফেরেশতাদের কাতারের সমতুল্য বলেছেন। কেউ প্রথম কাতারে নামাজের ফজিলত জানতে পারলে এর জন্য প্রতিযোগিতা করতেন বলেও উল্লেখ করেছেন।
হজরত উবাই ইবনু কাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করার পর বললেন, অমুক হাজির আছেন কি? সাহাবীগণ বললেন, না।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ দুই ওয়াক্ত (ফজর ও ইশা) সালাতই মুনাফিকদের জন্য বেশি ভারী হয়ে থাকে। তোমরা যদি জানতে এ দু’ওয়াক্ত সালাতে কী পরিমাণ সওয়াব রয়েছে তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তোমরা অবশ্যই এতে শামিল হতে।
রাসূল সা. আরও বলেছেন জামাতের প্রথম কাতার মালায়িকাহ্র (ফেরেশতাদের) কাতারের সমতুল্য। তোমরা যদি এর ফজিলত সম্পর্কে জানতে, তাহলে অবশ্যই তোমরা এজন্য প্রতিযোগিতা করতে। নিশ্চয় দু’জনের জামাত একাকী নামাজ আদায়ের চেয়ে উত্তম। তিনজনের জামাত দু’জনের জামাতের চেয়ে উত্তম। জামাতে লোক সংখ্যা যত বেশি হবে মহান আল্লাহর কাছে তা ততই বেশি পছন্দনীয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৫৫৪)
হাদিসের ফজিলতের আলোকে প্রথম কাতারে বসে নামাজ পড়ার কামনা থাকতে পারে যেকোনো মুসলমানের মনে। তবে প্রথম কাতারে নামাজের জন্য সবার আগে মসজিদে যাওয়াই কাম্য। আগে থেকে জায়নমাজ বিছিয়ে জায়গা দখল করা, পরে এসে মানুষের ঘাড় টপকে সামনের কাতারে যাওয়া উচিত নয়।
আর ইমাম ও মুয়াজ্জিন ছাড়া কারো জন্য জায়নামাজ জাতীয় কিছু দিয়ে কোনো জায়গা নির্দিষ্ট করে রাখা সম্পূর্ণ অন্যায়। মসজিদের সীমানায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সবার উচিত নিজেদের আল্লাহর গোলাম হিসেবে সমর্পণে ব্রতী হওয়া এবং সব ভেদাভেদ, আমিত্ব ও অহমিকা ভুলে একই কাতারে দণ্ডায়মান হওয়া। আর ইমামের দুই দিক থেকে সমান্তরালে কাতার পূরণ করা।
একবার আল্লাহর রাসূল সা. জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। এক লোক সবার ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে আসছিল। আল্লাহর রাসূল সা. বললেন, ‘বসো! তুমি মানুষকে কষ্ট দিলে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১১১৮)।
ঘাড়ের ওপর দিয়ে আসার কারণে মানুষের অন্তরে বিরক্তি সৃষ্টি হয়। এ কারণেই রাসূল সা. এমনটি করতে নিষেধ করেছেন। (আল বাহরুর রায়েক : ২-৩৬)