অর্থপাচার মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিনের ১২ বছর ও পরিচালক লে. জেনারেল (অব) এম হারুন-অর-রশিদকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় আদালত ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন।
গত ২৭ মার্চ বিচারিক আদালত এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। ওই দিনই ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।
মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুলসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৪ মে একটি মামলায় (বৃক্ষ রোপন) রফিকুলসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অন্য মামলায় (মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি) ৪৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। দুটি পৃথক অভিযোগপত্রে ৫৩ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন বর্তমানে কারাগারে আছেন।
বাকি আসামিরা হলেন—এম হারুন-অর-রশীদ, মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, ফারাহ দিবা, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, আজাদ রহমান, আকবর হোসেন, মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সাইদুল ইসলাম খান, সুমন আলী খান, শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মজিবুর রহমান, দিদারুল আলম, এম হায়দার উজ্জামান, জয়নাল আবেদীন, কাজী মো. ফজলুল করিম, মোল্লা আল আমীন, শফিউল ইসলাম, জিয়াউল হক মোল্লা, সিকদার কবিরুল ইসলাম, ফিরোজ আলম, ওমর ফারুক, সুনীল বরণ কর্মকার, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান, সাকিবুজ্জামান, এস এম আহসানুল কবির, এ এইচ এম আতাউর রহমান, জি এম গোলাম কিবরিয়া, আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমদ, এ কে এম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, দেলোয়ার হোসেন, জেসমিন আক্তার ও শফিকুল হক।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এতে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।
অপর মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। সেখান থেকে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। তাতে সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, এলসি (ঋণপত্র) হিসেবে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪০ টাকা ও সরাসরি ২ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলার পাচার করা হয়।
২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় ২০২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।