তালেবানের বাৎসরিক আয় ১৬০ কোটি ডলার, এতো টাকার উৎস কী?

আফগানিস্তানে রাজধানী কাবুলের মাত্র ১১ কিলোমিটার সীমার মধ্যে পৌঁছে গেছে তালেবান। শনিবার পর্যন্ত দেশটির বিদ্রোহী এই গোষ্ঠী ৩৪টি প্রদেশের অর্ধেকের বেশি প্রদেশ দখল করে নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সমরবিদরা তালেবানের ক্ষিপ্র গতিতে এলাকা দখলে বিস্ময় প্রকাশ করছেন। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে তালেবানের শক্তির উৎস কী, কোথা থেকে তারা অর্থ এবং অস্ত্র পান?

গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো বরাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার এক বিশেষ প্রতিবেদনে বল হয়েছে, তালেবানের হাতে কি পরিমাণ অর্থ আছে তা বলা সম্ভব নয়, পরিমাপ করাও সম্ভব নয়। তবে এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতি বছর তারা ৩০ কোটি ডলার থেকে ১৬০ কোটি ডলার সংগ্রহ করছেন।

২০২১ সালের জুনে জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তালেবান বেশির ভাগ অর্থ সংগ্রহ করে মাদক বিক্রি, চাঁদা দাবি, অপহরণের পর মুক্তিপণ থেকে। একটি গোয়েন্দা এজেন্সি বলেছে, শুধু মাদক পাচার থেকেই তালেবানরা আয় করেছে ৪৬ কোটি ডলার।

জাতিসংঘের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তালেবান গত বছর খনিজ সম্পদের মাধ্যমে ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে দান করা অর্থে বড় সুবিধা পাচ্ছেন তালেবান নেতারা। এছাড়া বেসরকারি দাতব্য সংস্থাগুলোর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অর্থ পায় তালেবান।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ধারণা, রাশিয়ার কাছ থেকে তালেবান অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পেয়েছে।

২০১৮ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার কমান্ডার জেনারেল জন নিকোলসন তালেবানদের সমর্থন দেওয়ার জন্য মস্কোকে দায়ী করে বলেন, রাশিয়ার জন্য আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অর্জন ব্যর্থ হয়েছে।

আরেকটি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তালেবানরা পাকিস্তান থেকে অর্থ পাচ্ছে। ইরানের কাছ থেকে তারা অর্থ পেয়েছে। যদিও ইরানের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ পাকিস্তানের থেকে কম।

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক ডাটা অনুযায়ী, ২০১৮ সালে আফগানিস্তান সরকার খরচ করেছে ১১০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই এসেছে বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে।

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদ আমেরিকায় ভার্চুয়াল এক নিরাপত্তা ফোরামে বলেন, তালেবানদের ওপর এখনও যুক্তরাষ্ট্রের কিছুটা প্রভাব আছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চায়।

তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক ফাউন্ডেশন ফর দ্য ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিজ-এর বিল রোজিও এ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, তালেবান আন্তর্জাতিক সহায়তা কিংবা বৈধতার পরোয়া করে না। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য দেশ শাসন করা।

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কর্মকর্তা ভবিষ্যদ্বাণী করে বলছেন, তালেবানরা জোরপূর্বক আফগানিস্তান দখল করে নিতে চায়। এতে সরকারের একাউন্ট, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভোল্ট তাদের হাতে আসবে; তারা শুল্ক (কর) সংগ্রহ করার সুযোগ পাবেন।

ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচির পরিচালক ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ম্যাথিউ লেভিট বলেন, বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তা হারালেও তালেবানরা টিকে থাকতে পারবে। তবে সেটা তালেবানদের লক্ষ্য (গোলপোস্ট) নয়। এ কথার অর্থ হলো- তালেবান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে চায়।

 

 

এ জাতীয় আরো সংবাদ

ড. ইউসুফ আল-কারাজাভির ইন্তেকালে ইসলামী ঐক্যজোটের গভীর শোক

নূর নিউজ

ইসলাম সহাবস্থানের কথা বলে, সেই সহাবস্থানের ক্ষেত্রে ভারত একটি মডেল: ড. মহম্মদ বিন আবদুল করিম আল ঈসা

নূর নিউজ

মাঝ আকাশে বিপাকে ভারতের বিমান, পাকিস্তানে জরুরি অবতরণ

আলাউদ্দিন