তীব্র গরম উপেক্ষা করে মক্কায় উপস্থিত লাখ লাখ হজযাত্রী

মরু আবহাওয়ার দেশ সৌদি আরবে তাপমাত্রার পারদ নিয়মিত উঠছে ৪৪ ডিগ্রিতে ; কিন্তু হজ পালনের সংকল্প (নিয়্যত) করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদিতে আসা লাখ লাখ হজযাত্রী এই গরম উপেক্ষা করেই তাদের হজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সৌদির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আশা করছে, চলতি বছর ইতিহাসের সর্বোচ্চসংখ্যক হজযাত্রীর আগমন ঘটবে দেশটিতে। কারণ, হজের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনও হজযাত্রীতে পরিপূর্ণ একের পর এক ফ্লাইট অবতরণ করছে সৌদির বিমানবন্দরগুলোতে।

হজ উপলক্ষে প্রতি বছর সৌদিতে যে আন্তর্জাতিক জন সমাগম হয়, তা এমনিতেই বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় সমাগম হিসেবে স্বীকৃত। করোনা মহামরির পর এই প্রথম বিশ্বের প্রায় ১৬০টি দেশ থেকে সৌদিতে এসেছেন ২০ লাখেরও বেশি হজযাত্রী। আগত এই যাত্রীরা যেন নিরাপদে-নির্বিঘ্নে হজ করতে পারেন, সেজন্য তৎপর সৌদি প্রশাসনও।

ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের নাম হজ। এই ধর্মের বিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থবান মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা ফরজ বা আবশ্যিক।

আরবি চান্দ্র ক্যালেন্ডারের শেষ মাস জিলহজ মাসের ৮ তারিখ শুরু হয় হজ, শেষ হয় ১০ তারিখ ঈদুল আজহার পশু কোরবানির মধ্যে দিয়ে। চলতি বছর সৌদিতে ২৮ জুন হবে ঈদুল আজহা, সেই অনুযায়ী ২৬ জুন থেকে ‍শুরু হবে হজ।

সৌদিতে সর্বোচ্চ এ যাবৎকালে সংখ্যক হজযাত্রীর সমাবেশ ঘটেছিল করোনা মহামারির আগের বছর ২০১৯ সালে। ওই বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদিতে গিয়েছিলেন প্রায় ২৫ লাখ হজযাত্রী।

গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে দেশটির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তৌফিক আল রাবিয়াহ সেই ভিডিওতে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, চবলতি বছর রেকর্ডসংখ্যক হজযাত্রীর সমাগম ঘটবে আমাদের দেশে। আর কয়েকদিন পরেই শুরু হবে হজ এবং সৌদি আরব তার ইতিহাসের বৃহত্তম এই জনসমাগমকে বরণ করার চুড়ান্ত প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে।’

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এএফপিকে জানিয়েছেন, আগে বিদেশি নারী হজযাত্রীদের জন্য পুরুষ অভিভাবক (মাহরাম) সঙ্গে রাখার যে বাধ্যতামূলক নিয়ম ছিল, ২০২১ সালে তা রদ করা হয়। এ কারণেই চলতি বছর রেকর্ডসংখ্যক বিদেশি হজযাত্রীর উপস্থিতি প্রত্যাশা করছে সরকার।

অবিশ্বাস্য অনুভূতি

জেদ্দাসহ বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে হজক্যাম্প পর্যন্ত হজযাত্রীদের পরিবহন করার জন্য ইতোমধ্যে ২৪ হাজার বাস এবং ১৭টি ট্রেন পরিষেবা দিচ্ছে। এসব বাস ও ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ৭২ হাজার হজযাত্রীকে বিমানবন্দর থেকে পৌঁছে দিচ্ছে ক্যাম্পে।

৬০ বছর বয়স্ক সৌয়াদ বিন ওউয়েস এই প্রথম হজ করতে সৌদি এসেছেন। মরক্কো থেকে আসা এই নারী এএফপিকে বলেন, ‘এটা অসাধারণ এক অনুভূতি। আমি বার বার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছি।’

কেবল ধর্মীয় ও সংস্কৃতিগতভাবেই নয়, সৌদির অর্থনীতিতেও হজ এবং ওমরাহ’র বিশাল অবদান রয়েছে। জ্বালানি তেলের পরেই হজ-ওমরা দেশটির বৃহত্তম অর্থনৈতিক খাত। প্রতি বছর এই খাত থেকে দেশটির আয় করে গড়ে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার।

এ কারণে হজযাত্রীদের স্বস্তি ও নিরাপত্তার ব্যাপারেও খুবই সজাগ সৌদির সরকার। চলতি বছর গরমের সময় হজের মৌসুম পড়েছে; ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার এই ব্যাপক গরমে হাজিদের হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও অন্যান্য গরমজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি।

তবে হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা ও চিকিৎসার জন্য ৩২ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী হজের সময়ে সদা তৎপর থাকবেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

‘এক চীন’ নীতির প্রতি ঢাকার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

নূর নিউজ

অবশেষে অবরুদ্ধ গাজায় ঢুকল ত্রাণবাহী ট্রাক

নূর নিউজ

পশ্চিমবঙ্গে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, ব্যাপক হতাহতের আশঙ্কা

আনসারুল হক