দাজ্জালের ফেতনা থেতে বাঁচতে জুমার দিন যে আমল করবেন

সুরা কাহাফ পবিত্র কুরআনের ১৮ নম্বর সুরা। আয়াত সংখ্যা ১১০। হজরত আনাস রা. বলেন, এ সুরাটি একসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা দুনিয়াতে আগমন করেন।

হজরত বারা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাতে সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করছিল। তার কাছে দুটি রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। এরই মধ্যে একটি মেঘখণ্ড এসে তাকে ঢেকে ফেলল। এরপর যখন মেঘখণ্ডটি তার কাছে চলে আসছিল, তখন তার ঘোড়া ছোটাছুটি করতে লাগল। অতঃপর সকালে ওই ব্যক্তি নবীজি সা-এর কাছে গিয়ে রাতের ঘটনা খুলে বলেন।

তিনি সা. বললেন, ওটা ছিল সাকিনা (রহমত), যা কুরআন তেলাওয়াতের বরকতে নাজিল হয়েছিল। (সহিহ বুখারি: ৫০১১, ৩৬১৪; সহিহ মুসলিম: ৭৯৫)

জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়ার অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, তার (ঈমানের) নূর এই জুমা হতে আগামি জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (মেশকাত: ২১৭৫)

হজরত আলী রা. বর্ণনা করেন, নবীজি সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সবধরণের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয়, তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও নিরাপদ থাকবে।

হজরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করবে, সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। (সহিহ মুসলিম: ৮০৯; আবু দাউদ: ৪৩২৩)

আরেক বর্ণনায়, দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচতে শেষ ১০ আয়াত পড়তে বলা হয়েছে।

‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াত পড়বে, সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা পাবে।’ (মুসনাদে আহমদ: ৪৪৬/৬)

ইমাম তিরমিজির বর্ণনামতে, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের ১০ আয়াত পড়বে, সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা পাবে।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৮৮৬)

হজরত আবু সাইদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, যেভাবে নাজিল করা হয়েছে, সেভাবে যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ পড়বে, তার জন্য সেটা নিজের স্থান থেকে মক্কা পর্যন্ত আলো হবে এবং শেষ ১০ আয়াত পড়লে দাজ্জালের গণ্ডির বাইরে থাকবে আর দাজ্জাল তার ওপর কোনোরূপ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। (সুনানে নাসায়ি: ১০৭২২)

সূরা কাহাফ পড়ার সময়: বৃহস্পতিবার সূর্য ডোবার পর থেকে শুক্রবার সূর্য ডোবা পর্যন্ত যে কোনো সময় সূরা কাহাফ পাঠ করলে হাদিস অনুযায়ী আমল করা হবে। কারণ, আরবি হিসাবে সূর্য ডোবার পর থেকে নতুন দিন শুরু হয়। আবার একাধিকভাগে ভাগ ভাগ করে উক্ত সূরা পড়ে শেষ করলেও একই সওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।

সুতরাং জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়া একজন মুমিনের জন্য জরুরি বিষয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফেতনার যুগে বেশি বেশি সুরা কাহাফ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

কুরআনের তিলাওয়াতের মাধ্যমে বিশ্বখ্যাত হয়েছেন যিনি

নূর নিউজ

জুমার দিনে সুরা কাহাফ: মুমিনের চার শিক্ষা

নূর নিউজ

মুসল্লিদের ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া বারণ যে কারণে

নূর নিউজ