কবি কাজী নজরুল ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশের জাতীয় কবি’ ঘোষণা করে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
কাজী নজরুল ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশের জাতীয় কবি’ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির জন্য সরকারের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবীর দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী আসাদ উদ্দিন চলতি বছরের ২২ জুন হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে রিট আবেদনটি জমা দিয়ে বলেন, দেশের সব নাগরিক জানলেও কবি কাজী নজরুল ইসলাম যে বাংলাদেশের জাতীয় কবি, তার আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি নেই।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দু’টি আইনে জাতীয় কবি হিসাবে নজরুলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি আয়োজনে তাকে জাতীয় কবি হিসাবে উল্লেখও করা হয়। কিন্তু সবই পরোক্ষ স্বীকৃতি। এমন স্বীকৃতি কালের পরিবর্তনে মুছে যেতে পারে।
রিটে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য জাতীয় পুরস্কার ও পদক প্রদানে অনিবার্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা অনুসরণ করতে হয়। সম্মাননাপত্র, পদক ইত্যাদি প্রদান করা হয়। কিন্তু কাজী নজরুল ইসলামের জাতীয় কবি ঘোষণায় এমন কোনও আনুষ্ঠানিকতার তথ্য বা প্রমাণ নেই।
এতে আরও বলা হয়, কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইতিহাস ও জাতীয় স্বীকৃতি কখনও অলিখিত থাকতে পারে না। অলিখিত ইতিহাস ও তথ্য সময়ের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে ঘোষণার দাবিতে কবি পরিবারের পক্ষ হতে বারবার অনুরোধ হয়েছে। নজরুল গবেষক এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকেও অনেক দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই দেশের সচেতন নাগরিক এবং উচ্চাদালতের আইনজীবী হিসাবে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
রিট আবেদনকারী অন্য আইনজীবীরা হলেন— মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন, মো. জোবায়দুর রহমান, আল রেজা মো. আমির, মো. রেজাউল ইসলাম, কে এম মামুনুর রশিদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান, মো. রেজাউল করিম ও মো. আলাউদ্দিন।