ইতিকাফের শাব্দিক অর্থ হলো অবস্থান করা, কোনো বস্তুর ওপর স্থায়ীভাবে থাকা। ইতিকাফের মধ্যে নিজের সত্তাকে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের মধ্যে আটকিয়ে রাখা হয় এবং নিজেকে মসজিদ থেকে বের হওয়া ও পাপাচারে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত রাখা হয়।
শরিয়তের পরিভাষায় ইতিকাফ বলা হয়, কোনও পুরুষ মসজিদে এবং নারী নিজ ঘরে নামাজের স্থানে কোনো নির্জন কামরায় মাহে রমজানের শেষ দশকে অর্থাৎ বিশ রমজান নিয়তসহ সূর্যাস্ত থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার আগ পর্যন্ত অবস্থান করাকে। রমজানের শেষ দশকের এই ইতিকাফকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া বলা হয়।
অর্থাৎ মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে একজন ব্যক্তি ইতিকাফ করলে সবার পক্ষ থেকে সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। মহল্লাবাসীর কেউ যদি ইতিকাফ না করে, তাহলে সবাই গুনাহগার হবে।(হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ২/৩০৪ রদ্দুল মুহতার ২/৪৪২ খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৭ ইলাউস সুনান ১৬/১৭২-৭৩ রদ্দুল মুহতার ৬/৫৫)
আলেমদের মতে, উত্তম হলো নিজ এলাকার মসজিদে ইতেকাফ করা। তবে যদি নিজ এলাকার মসজিদে ইতেকাফে বসার মত লোক থাকেন এবং অন্য মসজিদে আমলের পরিবেশ বেশি থাকে তাহলে অন্য মসজিদেও ইতিকাফ করার অনুমতি আছে।
ইতিকাফের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। ইমাম বায়হাকি বর্ণনা করেন, হুসাইন ইবনে আলী (রা.) সূত্রে বর্ণিত; রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাহে রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করবে, সে যেন দুটি হজ ও দুটি ওমরা করেছে।’ (কাশফুল গুম্মাহ : ১/২১২)।
আরেক হাদিসে এসেছে, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে মাহে রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করে, তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা মেহমান হিসেবে গ্রহণ করেন। তখন তারা যা দোয়া করে, আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করেন। ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ইতিকাফকারী ইতিকাফের কারণে গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং সব নেকির সওয়াব অর্জন করে।’-(আল মুগনি : ৩/৪৫৫)।