পরিস্থিতি বুঝে তাৎক্ষণিক কর্মসূচির চিন্তা বিএনপির

আগামী মাস থেকে নতুন ধাঁচের কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনকালীন সরকারের সুরাহা চাইছে দলটি। আন্দোলনের মাধ্যমেই তাদের একদফা দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করার লক্ষ্য নিয়ে সামনে কর্মসূচি জোরালো করতে চায় বিএনপি। এজন্য সেপ্টেম্বরে কর্মসূচিতে ভিন্নতা আনার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেয়া হতে পারে তাৎক্ষণিক কর্মসূচি। পুরো মাসজুড়েই একের পর এক কর্মসূচি আসবে বলে নেতারা জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, দলীয় ও সমমনা দলগুলোর কর্মসূচি ঘিরে সরকার পাল্টা ব্যবস্থা নিলে কর্মসূচি কঠোর থেকে কঠোরতর হবে। পরিবর্তন হবে কৌশলের। তবে সর্বোচ্চ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে দলীয় শক্তি প্রদর্শনের কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন দলটির নেতারা। তারা মনে করছেন এই সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ফাঁদ পাতা হতে পারে।

এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না। নেতাকর্মীরাও যাতে সতর্ক থাকেন এজন্য এখন থেকেই বার্তা দেয়া হচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা বলছেন, সেপ্টেম্বর মাসেই সরকার পতন আন্দোলনে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি বুঝে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় কঠোর কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামতে চান নেতাকর্মীরা। মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার ও বাধা আসলে লাগাতার কর্মসূচির কথাও বলেছেন কেউ কেউ। এদিকে বিএনপি’র সঙ্গে সমমনা দলগুলোর বৈঠকেও লাগাতার কর্মসূচির প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা। একদফা দাবি আদায়ে সেপ্টেম্বর মাসে কী ধরনের কর্মসূচি আসবে তা নিয়ে বিএনপি’র পক্ষ থেকে এখনই কিছু খোলাসা করা হচ্ছে না। সমমনা দলের নেতাদেরও এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানানো হচ্ছে না। তাদের একটা ধারণা দেয়া হচ্ছে। আন্দোলনের ধরন কেমন হবে তার ধারণা দেয়ার পাশাপাশি যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো ধরনের কর্মসূচি পালনে প্রস্তুত থাকতে বলা হচ্ছে।

সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই নতুন করে আবারো আন্দোলনের ঢেউ তোলার কথাও বলছেন নেতারা। তারা বলেন, আগামী মাসের শুরু থেকে ঢাকাকেন্দ্রিক আন্দোলনে জোর দিতে চান কেন্দ্রীয় নেতারা। একই সময়ে ঢাকার বাইরে সাংগঠনিক বিভাগগুলোতে কঠোর কর্মসূচি পালন করবেন নেতাকর্মীরা। এদিকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে লাগাতার কর্মসূচিতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আগামী মাসের যেকোনো সময় হঠাৎই আন্দোলনে গণবিস্ফোরণ হবে। তখন সরকারি দলগুলো ছাড়া অন্য দলগুলো বিএনপি’র সঙ্গে একই দাবিতে রাজপথে নেমে আসবে। সাধারণ মানুষ স্রোতের মতো সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে যেসব কর্মসূচি আসবে সেগুলোর ধরন বিগত কর্মসূচির চেয়ে অনেকটা ভিন্ন ধাঁচের হতে পারে। লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা হলে নেতাকর্মীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না। তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হলে সেখান থেকে পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ থাকবে না। ক্রমেই কঠোর কর্মসূচি আসবে। একটা সময় আসবে যখন লাগাতার কর্মসূচিতে আসতে পারে।

সেপ্টেম্বর মাসে আন্দোলনের প্রস্তুতি হিসেবে কয়েকটি ‘সমন্বয়ক টিম’ গঠন করেছে বিএনপি। এসব টিমে বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বিগত সময়ের ত্যাগী নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। আন্দোলনের গোপনীয়তা হিসেবে এসব টিমে কারা রয়েছে তা এখনই প্রকাশ করতে চায় না বিএনপি। ‘সমন্বয়ক টিম’ নেতাকর্মীদেরকে কর্মসূচিতে উপস্থিত রাখার কাজে সহায়তা করবে। ইতিমধ্যে বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা ‘সমন্বয়ক টিমের’ সঙ্গে কয়েকটি ধাপে বৈঠক করেছেন বলেও দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন এমন কয়েকজন নেতা জানান, বিএনপি’র আন্দোলনকে বানচাল করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসেও তা অব্যাহত থাকবে এমন তথ্যের ওপর নির্ভর করে বিএনপি চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যে দলের পক্ষ থেকে শীর্ষ নেতাদের সতর্ক বার্তাও দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিএনপি যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বিএনপিকে ‘তওবা করে’ জনমুখী রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান কাদেরের

নূর নিউজ

আর ৩০ দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না সরকার: খন্দকার মুক্তাদির

নূর নিউজ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন

আলাউদ্দিন