নূর নিউজ: মহামারিকালে মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক গতি ফিরে পেতে ও বেঁচে থাকার নিশ্চয়তায় চলমান স্বাস্থ্য পরিকল্পনার গ্রহণে প্রস্তাবিত ঢাউস সাইজের সংখ্যাতাত্ত্বিক বাজেট সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির ভাষ্য, গত এক দশকের অধিককাল ধরে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি ও ক্রনিক্যাপিটালিজম’র মাধ্যমে মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে সীমাহীন দুর্নীতি করে এক নজিরবিহীন অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছে, যাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নাই। তাই, সুশাসন ও জবাবদিহী নিশ্চিতকরণ অর্থনীতির অঙ্গীকার এ বাজেটে অনুপস্থিত।
আজ শুক্রবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের ৩৪ দিক তুলে ধরে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দুর্বার গণআন্দোলন সৃষ্টির মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করে একটি বৈষম্যহীন, জনবান্ধব, কল্যাণমুখী ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করছি।’
ফখরুল বলেন, ‘অপরিকল্পিত লকডাউনের নামে শাটডাউনে চূড়ান্ত রকম থমকে যাওয়া নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন-জীবিকার কথা মাথায় না রেখে কেবলমাত্র অর্থনীতির নানা তত্ত্ব ও বিশাল সংখ্যার আর্থিক উপস্থাপনার মাধ্যমে কার্যত জনগণের সাথে এক ধরনের ভাওতাবাজি করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ বাজেট একটি অবাস্তবায়নযোগ্য কাল্পনিক ও কাগুজে বাজেট ছাড়া আর কিছুই নয়- এটি গ্রহণযোগ্য নয়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির ১ শতাংশের মধ্যেই আছে- এ খাতের চাহিদা মিটবে না। স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ করতে হবে। করোনার টিকা প্রদানের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। সরকার ২৫ লাখ মানুষকে মাসে টিকা দেওয়ার কথা বলেছে। তবে এটা কবে কীভাবে কার্যকর হবে নিশ্চিত করে বলা হয়নি। সরকারের হিসেব অনুযায়ী প্রতি বছর টিকা নিতে পারবে ৩ কোটি মানুষ। কাঙ্ক্ষিত জনগোষ্ঠীকে টিকা দিতে লাগবে প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর। অথচ, ভারতে প্রতিদিন ১ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। সেই পর্যায়ক্রমে কতদিনে শেষ হবে।
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয় এসএমই খাতে। কিন্তু সরকারের প্রণোদনা পেলেন মূলত বড় শিল্পমালিকেরা। এসএমই খাতের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে মূলত ব্যাংকের মাধ্যমে। কিন্তু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অনেকেরই ব্যাংক হিসাব নেই। এনজিওগুলোর মাধ্যমে তাদের ঋণ দেওয়া উচিত। এই ব্যাপারে বাজেটে কোনো সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বড় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উচ্চাভিলাষ বজায় রাখা হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ শতাংশের ওপরে ধরা হয়েছে। কিন্তু সেই প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ দরকার, তা কীভাবে হবে বলা হয়নি। বাজেটে নতুন কোনো প্রণোদনার কথা নেই। পুরাতন সেই ব্যাংকনির্ভর প্রণোদনা অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে, তাতে কোনো লাভ হয়নি, হবেও না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অনেক আগেই সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে। গত এপ্রিলে গড়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫.৫৬%। এই বাজেটে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫.৩%। এ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবভিত্তিক নয়।’
তিনি বলেন, ‘মোট বাজেটের ৩৫.৫৬%, অর্থাৎ এক তৃতীয়াংশের বেশিই হলো ঘাটতি যা বৈদেশিক অথবা অভ্যন্তরীণ সোর্স থেকেই ঋণের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। বিএনপি অতীতে এদেশকে বৈদেশিক ঋণ নির্ভরতা থেকে বার বার বের করে আনার চেষ্টা করেছে আর আওয়ামী লীগ তাদের বিশৃঙ্খল মেগা প্রকল্প ও মেগা দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতিকে বার বার বৈদেশিক নির্ভর করে দেশের প্রতিটি শিশুর মাথায় জন্মের আগেই হাজার হাজার টাকার ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। এবারের বাজেট তারই চরম বহিপ্রকাশ। আয় নাই, ধার করা টাকায় বাজেট করা হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জনগণকে কোভিডের মহাসংকট থেকে রক্ষার দিকনির্দেশনা নেই, এটি দুর্নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার বাজেট। বিদেশি ঋণ জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে পরিশোধ করা হবে।’
সার্বিকভাবে বাজেট বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট পথরেখা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেনে মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ঘোষিত বাজেটে অপচয়, অব্যবস্থাপনা বন্ধ করে সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ হয়নি। বরং এই সরকারের সময় দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা ও আইনের শাসন এবং জবাবদিহির যে ঘাটতি রয়েছে, তারই প্রতিফলন ঘটেছে বাজেটে।’
বাজেট হওয়া উচিত ছিল ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতিমালার পথনির্দেশনা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বাজেট উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভবিষ্যতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের মডেল কী হতে পারে, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বাজেটের ফোকাস কী হবে, তার পথনির্দেশনার বাজেট, সরকার সেদিকে যায়নি। মুক্তবাজার অর্থনীতির কথা বলে দেশে আয়বৈষম্য বেড়েছে ‘স্বজন তোষণের’ ভিত্তিতে এ সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে। যার ফলে মাত্র ১ শতাংশ লোকের কাছে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সম্পদ পুঞ্জীভূত হচ্ছে। এমনকি এই করোনাকালেও অপ্রদর্শিত আয়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন হাজার হাজার লোক। ফলে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সমপ্রতিযোগিতার স্বাভাবিক যে বিকাশ, সে সুযোগ তারা বন্ধ করে দিয়েছে।’
এবারের এ বাজেট হচ্ছে জিডিপির মাত্র ১৭.৪৬ শতাংশ। ২০২১ এ মূল বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা, যা ছিল জিডিপির ১৭.৯০ শতাংশ। এ হিসাবে বাজেটের প্রকৃত আকার বৃদ্ধির পরিবর্তে সংকোচিত হয়েছে বলে মনে করে বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী এবারের বাজেটের শিরোনাম করেছেন ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’। কিন্তু দিন আনে দিন খায় এমন গোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা রক্ষায় নগদ অর্থ এর কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নেই। এ খাতে পুরাতন ত্রুটিপূর্ণ ব্যাংকনির্ভর ঋণের কথাই বলা হয়েছে।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সম্প্রসারণের নামে যে সামান্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা নিতান্তই অপ্রতুল। এক গবেষণায় উঠে এসেছে দেশে ২ কোটি ৪৫ লাখ নতুন গরিব সৃষ্টি হয়েছে। নতুন দরিদ্র পুরাতন দরিদ্র আর ক্ষণস্থায়ী দরিদ্র নিয়ে সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি। তা ছাড়া রয়েছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৮৬% শ্রমিক। এদের প্রত্যেককে নগদ আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। এ খাতে জিডিপি ৬ থেকে ৭ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে।’
সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বরাদ্দ এক লাখ সাত হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। এখানে বলে রাখা ভালো সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন, সঞ্চয়পত্রের সুদ ও প্রাইমারি স্কুল শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকাও রয়েছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য যে সহায়তা সরকার দিয়েছে তা ‘লোকদেখানো’। ৫-৬ কোটি মানুষের জন্য মাথাপিছু ১-২ শ’ টাকাও পড়বে না। করোনায় দেশের বেকার এবং আয় কমে যাওয়া মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া উচিত। শহরে কাজ হারিয়ে অনেকে গ্রামে চলে গেছেন। বাজেটে এদের বাঁচানোর জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নেই। সরকারি ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজর মধ্যে কেবলমাত্র অর্থমন্ত্রণালয়ের রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের পুরোটাই বাস্তবায়িত হয়েছে। অন্যখাতে ঘোষিত প্রণোদনা বিতরণ চিত্র তথৈবৈচৈ। অগ্রগতি মাত্র ৬০ শতাংশ, যোগ করেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাজেটটি দেশের ৫০ তম বাজেট। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সময় এটা। কিন্তু বাজেটে সে লক্ষে বড় কোনো সংস্কার পরিকল্পনার উল্লেখ নেই। আমরা বাজেট প্রস্তাবনার সব ধরনের নতুন উদ্যোক্তাদের পাঁচ বছর ট্যাক্সহলিডে দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু সরকার এ বাজেট নতুন উদ্যোক্তাদের ব্যবসা শুরুর প্রথম তিন বছর লাভ-লোকসান নির্বিশেষে ১০% উৎস কর আরোপের প্রস্তাব করেছে। বিনিয়োগ হবে কীভাবে? ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা আগের মতোই তিন লাখ টাকা থাকছে। এটা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা উচিত বলে মনে করি।’
সরকার আইটি খাতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বললেও কেবলমাত্র প্রযুক্তি শিক্ষা বেসরকারি কলেজের আয়ের উপর ১৫ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করেছে। এটি স্ববিরোধীতা। করোনার ক্ষত থেকে শিক্ষা খাত পুনরুদ্ধারে কোনো প্রণোদনা দেয়নি সরকার। অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পরেছে। ১০ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর বেতনভাতা বন্ধ আছে। কেজি স্কুল ও কারিগরিসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বাজেটে এসব খাতে ব্যয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রস্তাব দেখা যায়নি। বরঞ্চপ্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ১৫% কর আরোপের প্রস্তাব করেছে। সরকার মানবসম্পদ উন্নয়নের কথা বললেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানের উপর ট্যাক্স আরোপ করে মূলত শিক্ষা সংকোচন নীতি গ্রহণ করল। বিএনপি সরকার সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা শুরু করে উচ্চ শিক্ষার প্রসার ঘটানোর সুযোগ করে দিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী এ প্রতিষ্ঠানগুলো নন প্রফিট অর্গানাইজেশন। শিক্ষা খাতে জিডিপি’র ৫% বরাদ্দ করতে হবে, যোগ করেন ফখরুল।
বাজেটে সরকার মৎস্য চাষ খাতে নতুন করে করারোপ করেছে- ‘তা বাতিলের অনুরোধ জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘মাইক্রোবাস ও হাইব্রিড গাড়ি আমদানিতে শুল্কহার কমানো হয়েছে। এমনিতেই ট্রাফিক জ্যাম, তার উপর আরও কমদামে গাড়ি আমদানি উৎসাহ করা হলো। করজাল সম্প্রসারণে বাড়ির নকশা অনুমোদন ও সমবায় সমিতির নিবন্ধনে টিআইএন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে বাড়ির মালিক ও সমবায় সমিতিগুলো করজালের আওতায় আসবে। যে প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতি বাঁচিয়ে রেখেছেন, তাদের জন্য বাজেটে কোনো পদক্ষেপ নেই। রপ্তানি খাতে ২ শতাংশ ভর্তুকির সুবিধা পাবে অর্থ পাচারকারীরা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী অর্থবছরটি চালাতে অর্থমন্ত্রী কোনো উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করবেন? দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ঋণ নেওয়া হবে প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বিদেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি। তবে উচ্ছ সুদের সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকেও ঋণ নেওয়া হবে ৩২ হাজার কোটি টাকা। দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও থাকছে প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে ঋণের সুদই দিতে হবে ৬৯ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া আছে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উন্নয়ন ব্যয় তো রয়েছেই।’
তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে শুল্ক-করে তুলনামূলক বেশি ছাড় থাকছে। বড় ছাড় আসছে করপোরেট করে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করহার আড়াই শতাংশ কমিয়ে ৩০ শতাংশ, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারও আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী দুহাত ভরে দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের। বাজেটে হতাশ মধ্যবিত্তরা, খুশি ব্যবসায়ীমহল। কর্পোরেট কর হার কমানো হয়েছে। ব্যবসায়ীক টার্ন-ওভার করহার কমেছে। বাজেটে নানাভাবে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হয়েছে। কিন্তু বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য তেমন কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘বাজেটে অর্থমন্ত্রী দারিদ্রের হার ১২% নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছেন। কীভাবে দারিদ্রের হার কমানো হবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই এ বাজেটে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম এবং দক্ষিণ এশিয় নেটওয়ার্ক পরিচালিত জরিপ বলছে, ৪২ শতাংশ মানুষ এখন দরিদ্র। দেখা যাচ্ছে মধ্যবিত্তদের বড় অংশই নিম্নবিত্তের কাতারে চলে গেছেন। তাহলে দারিদ্রসীমা ১২% নামবে কীভাবে?