ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অব্যাহত সমর্থন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ফিলিস্তিনের জনগণ ও সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

ফিলিস্তিনিদের সাথে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণীতে ফিলিস্তিনি জনগণের মর্যাদাপূর্ণ জীবন সার্বভৌম মাতৃভূমি নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবিক সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বার্তায় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সংহতি দিবসের গৌরবময় উপলক্ষ্যে আমি ফিলিস্তিনি জনগণ ও সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে সবসময় স্বাধীনতা, শান্তি এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে।

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বড় অবদানকারী দেশ।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, যুদ্ধ শান্তি আনতে পারে না বরং যুদ্ধ ধ্বংস এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করে।

তিনি বলেন, একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তাদের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটুট সমর্থন রয়েছে।

বাংলাদেশ কখনোই বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন সমর্থন করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্দেশিত এবং আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত নীতি অনুযায়ী আমরা সবসময় ধর্মনিরপেক্ষতা ও শান্তির আদর্শ অনুসরণ করি।’

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ভাই-বোনেরা, যারা তাদের বৈধতা থেকে ছাপ্পান্ন বছরেরও বেশি সময় ধরে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রতি সংহতির প্রকাশে নিবেদিত থাকবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ গাজায় আবাসিক এলাকা ও হাসপাতালগুলোতে অব্যাহত নৃশংস বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানায়, এতে নারী, শিশু এবং বৃদ্ধসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি সাধারণ নাগরিক নিহত ও আহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে এই নৃশংসতা মানবাধিকারের লংঘন।

তিনি বলেন, আমরা গাজা ও ফিলিস্তিনে সামগ্রিকভাবে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন ‘আমরা আলোচনার মাধ্যমে প্রতিটি সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ সর্বদা ফিলিস্তিনের জনগণ ও সরকারের পাশে আছে।’

রাষ্ট্রপতি মানবতা, ন্যায় ও ন্যায্যতার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কাজ করি যাতে তাদের নিরাপদ, নির্ভীক এবং তাদের সার্বভৌম মাতৃভূমিতে মর্যাদাপূর্ণ জীবন পায়।’

ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দিয়ে ১৯৬৭-এর পূর্ববর্তী সীমানা এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানীসহ দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান করার ভিত্তিতে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্ম নিয়ন্ত্রণ অধিকার ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার নিরঙ্কুশ অধিকারের প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবসময় সারা বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ বা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নিপীড়িতদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের এ দৃঢ় অঙ্গীকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় পরিচালিত এবং এ নীতি আমাদের জাতীয় সংবিধানে নিহিত রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের প্রতি তাদের সংহতি প্রকাশে অবিচল থাকবে যারা ছাপ্পান্ন বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ গাজায় নারী ও শিশুসহ নিরীহ বেসামরিক মানুষদের নির্মম হত্যাকা-ের এবং শরণার্থী শিবির, স্কুল, হাসপাতাল এবং ধর্মীয় স্থানসহ সুরক্ষিত স্থাপনার ওপর নির্বিচারে বোমা হামলা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গাজায় বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল বর্তমানে যে যুদ্ধ চালিয়েছে তা হচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর সম্মিলিত শাস্তির সমতুল্য এবং ইসরালে কর্তৃক মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন।”

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ইসরায়েলের বর্বরতা বন্ধের এবং সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, ইসরায়েল অব্যাহতভাবে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইন উপেক্ষা ও লঙ্ঘন করা তা সত্ত্বেও দায়মুক্তি ভোগ করে চলেছে।

তিনি বলেন, “আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, ফিলিস্তিনের জনগণ ন্যায়বিচার ও প্রতিকার পাওয়ার দাবি রাখে যা শুধুমাত্র অব্যাহত দখলদারিত্বের মধ্যে বসবাসরত ফিলিস্তিনের জনগণের আত্ম নিয়ন্ত্রণ অধিকার সহ একটি ন্যায্য সমাধান নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, “আমরা আরো বিশ্বাস করি যে, জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক অসংখ্য প্রস্তাবের বাস্তবায়ন, চার জাতি প্রস্তাবিত রোড ম্যাপ, মাদ্রিদ শান্তি সম্মেলনের শর্তাবলী, আরব পিস ইনিশিয়েটিভ এবং জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রের প্রচেষ্টা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করতে এবং ফিলিস্তিন সমস্যার একটি স্থায়ী শান্তিপূর্ণ ও ন্যায্য সমাধান লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী একটি সার্বভৌম স্বদেশে, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাসের জন্য ফিলিস্তিনি জনগণের আকাঙ্খা ও বৈধ অধিকার পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা জোরদার এবং কার্যকর ও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহনের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

পাঁচ মিনিটে পদ্মা পাড়ি, তিন ঘণ্টায় ঢাকা

নূর নিউজ

করোনার কারণে সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নূর নিউজ

জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়

নূর নিউজ