বাংলাদেশের মানুষ কত ডিগ্রির বেশি তাপ সহ্য করতে পারবে না

মানুষের দেহের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট, অর্থাত্‍ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেই জ্বর বলা হয়। সাধারণত মানব শরীর ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। এর বেশি তাপমাত্রা হয়ে গেলে শরীরে প্রোটিনের ভারসাম্যতা নষ্ট হতে পারে, মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। মোদ্দাকথা, মানব শরীর ডিম ভাজার মতো অবস্থা হবে।

সারাদেশে বর্তমানে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে অনেকটাই বাড়তে পারে। আজ সোমবার ঢাকায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখাচ্ছে। কিন্তু আরেকটু বাড়লে তো বোধহয় মানুষ সহ্য করতেই পারবে না!

ভালো বিষয় হল, মানুষ ঊষ্ণ-রক্তের প্রাণী। বেশি ঠান্ডা বা গরমে মানব শরীর নিজস্ব মেকানিজমে লড়াই করে, একে বলে হোমিওস্ট্যাসিস। এই প্রক্রিয়া মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামে একটি অংশ দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ঘাম, মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া বা বাইরের হাওয়ায় কাটানো, এই সবের মধ্যে দিয়েই হাইপোথ্যালামাস তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

শরীর যখন নিজেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাহলে চিন্তার কী আছে? এতটা সহজ নয়। কোনোরকম অসুস্থতা বা সংক্রমণ ব্যাধি ছাড়া, মানব শরীরের তাপমাত্রা নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের উপরে। যেমন, বাইরের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, অক্সিজেনের পরিমাণ ইত্যাদি।

১৯৮৫ সালের এক রিপোর্টে মর্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, ৪ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত মানব শরীর মোটামুটি সহ্য করে নেয়। কিন্তু আর্দ্রতা যদি ৫০ শতাংশের নিচে হয়, তাহলে এর চেয়েও বেশি তাপমাত্রাতেও মানবশরীর সহ্য করে নেয়। বেশি আর্দ্রতায় বেশি ঘাম হয়, তার মাধ্যমেও তাপমাত্রা শরীরে নিয়ন্ত্রিত হয়।

অন্যদিকে ২০১৪ সালের অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির থার্মাল আরগোনোমিকস ল্যাবরেটরির একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ন্যূনতম পোশাকে অত্যন্ত শুষ্ক একটি কক্ষে (আপেক্ষিক আর্দ্রতা ১০ শতাংশ) বিশ্রামরত একজন মানুষ যদি ক্রমাগত পানি পান করে যান, তবে তিনি সম্ভবত সর্বোচ্চ ১১৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৬ দশমিক ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রা পর্যন্ত সহ্য করতে পারবেন। এরপর ব্যাপারটি অত্যধিক তাপমাত্রার পর্যায়ে চলে যাবে। গবেষণার সূত্র ধরে বলাই যায়, আরেকটু তাপমাত্রা বাড়লে বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিষয়টা একেবারেই অসহ্য হয়ে উঠবে।

মূলত, হাইপোথ্যালামাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেরও একটা সীমা আছে। বেশি তাপমাত্রা, অস্বাভাবিক আর্দ্রতায় শরীরে হাইপারথার্মিয়া দেখা দেয়। তখন দুর্বল, বমি ভাব, তেষ্টায় গলা শুকনোর মতো সমস্যা তৈরি হয় শরীরে। সোডিয়াম, পটাশিয়াম ফল করতে পারে। যার জেরে শরীর কোলাপ্সড করে যেতে পারে।

সর্বোচ্চ কত তাপমাত্রায় মানুষের বেঁচে থাকার রেকর্ড রয়েছে?

মার্কি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি জায়গা রয়েছে, যার নাম ফার্নেস ক্রিক র‍্যাঞ্চ। পৃথিবীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে ফার্নেস ক্রিক র্যাঞ্চ-এর। এটি ছিল ৫৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯১৩ সালের ১০ জুলাই। যদিও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা পরবর্তীকালে সেই দাবি খারিজ করে জানায়, ১৯২২ সালে লিবিয়াতে আল আজিজিয়া নামে একটি জায়গায় তাপমাত্রা ওঠে ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

ভারতের রাজস্থানের ফালোদিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। পোখরানের কাছে এই ফালোদিতে ২০১৭ সালের অগাস্টে ৫০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলে। ২০১৯ সালে দিল্লিতে রেকর্ড তাপমাত্রা পৌঁছয় ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

নামাজ থেকে ফেরার পথে গাড়ির ধাক্কায় নিহত পুলিশের এসআই

আলাউদ্দিন

বাংলাদেশ জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার : জাতিসংঘ মহাসচিব

নূর নিউজ

সরকার কর্মসংস্থান অধিদপ্তর করার কথা ভাবছে : শ্রম উপদেষ্টা

নূর নিউজ