আরমার হোসেন : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। তার পতনের পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে ভারতের। দুদেশের সম্পর্ক নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তজার্তিক গণমাধ্যমে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে চান।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
জয়শঙ্কর বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে চাই। প্রতিবেশীরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটবে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী এবং আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে চাই। আমাদের মধ্যে ভালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে; আমাদের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক ভালো। আমরা সম্পর্কটা এভাবেই রাখতে চাই।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তারপর থেকে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। প্রাথমিকভাবে তিনি অল্প সময়ের জন্য ভারতে থাকবেন বলে আশা করা হলেও এখন শোনা যাচ্ছে—যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেওয়ার প্রচেষ্টা করছেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত সফল হয়নি। ভারতে হাসিনার অব্যাহত উপস্থিতি অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দিল্লির জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
এর আগে গত মাসে ভারতীয় পার্লামেন্টে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, শেখ হাসিনা খুব স্বল্প নোটিশে দিল্লির আসার অনুমতি চেয়েছিলেন। তারপর একটি ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, হাসিনাকে তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভারত সরকার সময় দেবে।
তবে ভারতের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, সামনের দিনে ভারতকে একটি ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেটি হলো বাংলাদেশের সবাই ইসলামপন্থি, বিএনপিপন্থি। ইসলামপন্থিরা এই দেশটিকে আফগানিস্তানে পরিণত করবে। আর বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ। এসব ধারণ থেকে ভারতকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশও অন্য প্রতিবেশীর মতো একটি প্রতিবেশী দেশ।