বাংলার আকাশে-বাতাসে আজ সরকার পতনের ঘণ্টা বাজছে : নুর

গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে প্রশাসনের কতিপয় দলীয় কর্মকর্তাকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। কিন্তু বাংলার আকাশে-বাতাসে আজ ফ্যাসিবাদের পতনের ঘণ্টা বাজছে। চলমান জনসম্পৃক্ত আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় নিতেই হবে।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে র‌্যালিপূর্ব এক যুবসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ যুবঅধিকার পরিষদের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই কর্মসূচি হয়।

নুরুল হক নুর বলেন, দেশ যখন একটা গণঅভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে, ১৪ বছরের ভোটাধিকার বঞ্চিত ছাত্র-যুবকরা যখন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমেছে- তখন এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ছাত্রলীগকে দিয়ে কথিত ছাত্রসমাবেশ করাচ্ছে। জোরজবরদস্তি করে, হুমকি-ধমকি দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, গার্মেন্টস, দোকান বন্ধ করে এই সমাবেশে নিয়ে এসেছে। ওই কথিত ছাত্রসমাবেশ থেকে দেশের লাখ লাখ বেকার ছাত্র-যুবকদের কর্মসংস্থান নিয়ে কোনো বক্তব্য আসেনি, চাকরির বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্র-যুবকদের নিয়ে কিছু বলা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, গত ১৪ বছরে ছাত্রলীগের হাতে ৪৮ জনের প্রাণ গেছে। ছাত্রলীগের হাতে বুয়েটের আবরার, ঢাবির আবু বক্কর, হাফিজ, চবির দিয়াজ, ঢামেকের রাজিব, পুরান ঢাকার নিরীহ দর্জি বিশ্বজিতের রক্ত। ছাত্রলীগ এখন আর কোনো ছাত্রসংগঠন নয়, খুনিদের সংগঠন। গত ১৪ বছরে কেউ ছাত্রলীগের ১৪টি ভালো কাজ দেখাতে পারবেন না। কিন্তু ১৪শ’ খারাপ কাজের দৃষ্টান্ত আছে।

ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, এই কথিত ছাত্রসমাবেশের নামে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে গণআন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগকে সহিংসতা-বিশৃঙ্খলার উসকানি দেওয়া হয়েছে। তারা প্রশাসনের কতিপয় দুর্বৃত্তকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। কিন্তু বাংলার আকাশে-বাতাসে আজ ফ্যাসিবাদের পতনের ঘণ্টা বাজছে।

নুর আরও বলেন, বিরোধী আন্দোলন দমাতে সরকার গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। কারাগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি আসামি আটকে অমানবিক পরিবেশে রেখেছে, যাতে তারা বেরিয়ে আর রাজনীতি না করে। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে কেউ রাজনীতি করবে না- এমন কথা বলেনি, বরং ফ্যাসিবাদের পতন না ঘটিয়ে তারা ঘরে ফিরবে না- জেল থেকে বেরিয়ে তারা এ কথা বলছে। আগামী ২ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই জনগণকে বলব- দেশ রক্ষায় রাজপথে নামুন। মনে রাখবেন, এই সরকার যদি এবারও অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসে, তাহলে আগামী ২০ বছরের জন্য বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, এ দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে, সেপ্টেম্বরেই আওয়ামী লীগের পতন হবে। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ডিএমপি কমিশনারকে জিজ্ঞাসা করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ কী করবে? এই প্রশ্নের মধ্যে অনেক রহস্য আছে? জনগণের আন্দোলনে পুলিশ যদি বাধা দেয়, মানুষের বুকে গুলি করে, হত্যা করে- তাহলে র‌্যাবের মতো পুলিশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। তবে আমরা চাই, পুলিশ প্রশাসন জনগণের পাশে থাকুক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাশিত নয়।

তিনি আরও বলেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব কেন এত ভয় পাচ্ছেন, ক্ষমতার পরিবর্তন হলে একরাতেই তারা শেষ হয়ে যাবে? কী এমন অপরাধ করেছেন, এত শেষ হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন? ক্ষমতার পরিবর্তন হলে কোনো গুম-খুন, অত্যাচার হবে না। তাই আওয়ামী লীগের ভয়ের কোনো কারণ নেই। তাদের পতনের পরে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

শ্বেতপত্রের পাতায় পাতায় অসংখ্য ভুল তথ্য

নূর নিউজ

আশ্রয়ণ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাচ্ছে আরও ২৬ হাজার পরিবার

নূর নিউজ

১২ দিনে দেশে ১০০ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা

আনসারুল হক