মসজিদে শোরগোল নিয়ে রাসূল সা. যেভাবে সতর্ক করেছিলেন

মুসলিমদের প্রায় সকলেই মসজিদের আদব-সম্মান, পবিত্রতা রক্ষার গুরুত্বতা অনুধাবন করেন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষাই আপোষহীন থাকেন, কোনোভাবে যেন আল্লাহর ঘরের পবিত্রতা নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেন। এখানে সবাই আল্লাহ তায়ালাকে ডাকতে আসেন এবং শুধু তাঁরই ইবাদত করার চেষ্টা করেন।

পবিত্র কোরআনেরও আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট করে বলেছেন মসজিদে শুধু তাঁর ইবাদত করার কথা। বর্ণিত আছে, ‘মসজিদ মূলত আল্লাহর ঘর। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে তোমরা অন্য কাউকে ডেকো না।’ (সূরা জিন, আয়াত : ১৮)

কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে মসজিদে আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে ডাকার অবকাশ নেই। মসজিদে ইবাদত ছাড়া অন্য কিছু করাও জায়েয নেই। একইসঙ্গে এর পবিত্রতা রক্ষার বিষয়ে কোনো ধরনের গড়িমড়ির সুযোগ নেই। যেকোনো মূল্যে মসজিদকে দুনিয়ার অনাকাঙ্খিত বিষয় থেকে রক্ষা করা ঈমানী দায়ীত্ব।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মসজিদ বানানো হয়েছে আল্লাহর স্মরণ ও তার আলোচনা, নামাজ ও কোরআন পাঠের জন্য। (মুসলিম, হাদিস : ২৮৫)

আল্লাহর রাসূলের যুগে মদিনায় মসজিদককে কেন্দ্র করে সমাজ পরিচালিত হতো। মসজিদে নববী থেকে তিনি সাহাবিদের সব নির্দেশ প্রদান করতেন, আল্লাহ তায়ালার বিধান জানাতেন মসজিদ থেকেই। তবে তিনি সর্বদা পবিত্রতার সাথে এবং মসজিদের আদব রক্ষার নির্দেশ দিতেন।

এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের মসজিদকে অবুঝ শিশু ও পাগলদের থেকে বাচিয়ে রাখো, তদ্রুপ ক্রয়-বিক্রয়, বিচার-আচার, উচ্চ স্বর, দণ্ডপ্রদান ও তরবারি কোষমুক্ত করা থেকে বিরত থাকো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৭৫০)

মসজিদে উচ্চ আওয়াজ ও চেঁচামেচির বিষয়কে কিয়ামতের নিদর্শন স্বরূপ বলা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যখন লোকেরা জিহাদলব্ধ গনিমতের সম্পদকে নিজের সম্পত্তি ভাববে, আমানতকে স্বীয় সম্পত্তি মনে করবে, জাকাতকে জরিমানা মনে করবে, দ্বিনি ইলম ছাড়া অন্য ইলম শিক্ষাকে প্রাধান্য দিবে, পুরুষরা স্ত্রীর তাবেদারি করবে, মায়ের সাথে নাফরমানি করবে, বন্ধু-বান্ধবকে পিতার চেয়ে আপন হিসেবে গ্রহণ করবে, মসজিদে উচ্চ শোরগোল ও চেঁচামেচি বেড়ে যাবে, ফাসেক লোক সমাজের নেতা বনবে, সর্বাপেক্ষা নিচু প্রকৃতির লোক সমাজের কার্যভারপ্রাপ্ত হবে, জালিমকে তার জুলুমের ভয়ে সম্মান করবে, নর্তকী ও বাদ্যযন্ত্র বিস্তার লাভ করবে, মদ প্রচুর পরিমাণে পান করা হবে, পরবর্তী লোকেরা পূর্বপুরুষদের মন্দ বলবে, তখন তোমরা এরূপ বিপদের অপেক্ষায় থেকো যে লালবর্ণের প্রচণ্ড বায়ু, ভূমিকম্প, জমিন ধসে যাওয়া, লোকের রূপান্তর হওয়া ও পাথর বর্ষণসহ ইত্যাদি পরিলক্ষিত হবে। আরো অনেক আপদ-বিপদ ধারাবাহিকভাবে আসতেই থাকবে, যেমন মুক্তামালা ছিঁড়ে গেলে দানাসমূহ খসে পড়তে থাকে।’ (তিরমিজি শরীফ, হাদিস : ২২১০, ২২১১)

এই হাদিসে রাসূল সা.-এর জবান থেকে কিয়ামতের কিছু নিদর্শনের কথা বর্ণিত হয়েছে। তারমধ্যে একটি হলো মসজিদে চিৎকার, চেঁচামেচি হৈ-হুল্যর বেড়ে যাওয়া। বর্তমানে এসব ঘটনা যেন নিত্য দিন ঘটছে। যা রাসূল সা.-এর বর্ণিত হাদিসের বাণীর প্রতি ঈঙ্গিত করে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মাদ এলোরে দুনিয়ায়

নূর নিউজ

ফরজ গোসলের আগে কি সেহরি খাওয়া যায়?

নূর নিউজ

ইসলামী ছাত্রসমাজ তাকওয়াবান ব্যক্তিত্ব নেতৃত্ব উপহার দিচ্ছে: এহতেশামুল হক সাখী

নূর নিউজ