সুখ-দুঃখ সঙ্গী করে পুরো জীবন একসঙ্গে কাটিয়ে দেন স্বামী-স্ত্রী। সংসার জীবন শুরুর পর থেকে দুজনের উপর দুজনের বেশকিছু অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলাম নারীকে স্বামীর হকের প্রতি দায়িত্বশীল এবং সংসার আগলে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে স্বামীকে স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার এবং তার অধিকার আদায়ে সচেতন থাকার কথা বলেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সঙ্গে উত্তম ব্যবহার কর।’ -(সূরা আন নিসা, আয়াত, ১৯)
স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহারকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম মানুষ বলে অভিহিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মুমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ মুমিন ওই ব্যক্তি, যার ব্যবহার ও চরিত্র সর্বাপেক্ষা উত্তম। আর তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে স্ত্রীদের কাছে উত্তম।’ -(তিরমিজি)
ইসলামে স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরের সহযোগী বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা তোমাদের পোশাকস্বরুপ এবং তোমরাও তাদের পোশাকস্বরুপ।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৭)
আয়াতে স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের পোশাক বলার মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, তারা পরস্পরের সম্মান রক্ষাকারী, আশ্রয়স্থল এবং পরস্পরের হৃদয়ের প্রশান্তি লাভের মাধ্যম। পোশাক পরার পর মানুষ যেভাবে স্বস্তি লাভ করে, ঠিক তেমনি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের মাধ্যমে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ করেন।
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যারা একে-অপরের কল্যাণকামী এবং দ্বীন ও ইসলামের বিষয়ে অপরকে সাহায্যকারী তাদের সর্বোত্তম বলে গণ্য করা হয়েছে। এ বিষয়ে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রতি দয়া করুন যে রাতে উঠে নামাজ আদায় করে এবং তার স্ত্রীকেও জাগায়। তারপর সেও নামাজ পড়ে। আর যদি সে (স্ত্রী) ঘুম থেকে উঠতে না চায়, তাহলে তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহ সেই নারীর প্রতি দয়া করুন যে রাতে উঠে নামাজ আদায় করে এবং তার স্বামীকেও জাগিয়ে দেয়। আর সেও নামাজ পড়ে। আর সে ঘুম থেকে জাগতে অস্বীকার করলে সে তার চেহারায় পানি ছিটিয়ে দেয়।’ (মিশকাত, হাদিস, ১২৩০, আবু দাউদ, হাদিস, ১১৮১)