আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। কারো গায়ের রং কালো, কারো বা ফর্সা, লালচে। কারো স্বভাব কোমল, কেউ বা কঠোর স্বভাবের। মানুষের এই স্বভাব ও বর্ণ বৈচিত্র্য আল্লাহ তায়ালার নিদর্শনের অন্তভুর্ক্ত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖ خَلۡقُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافُ اَلۡسِنَتِكُمۡ وَ اَلۡوَانِكُمۡ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِكَ لَاٰیٰتٍ لِّلۡعٰلِمِیۡنَ
তাঁর নিদর্শনের মধ্যে হল, আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বিভিন্নতা। জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই এতে আছে বহু নিদর্শন। (সূরা রুম, আয়াত : ২২)
মানুষের বর্ণ বৈচিত্র্য নিয়ে এক হাদিসে হজরত আবু মুসা আল-আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর সব জায়গা থেকে এক মুঠো মাটি নিয়ে আদম আ.-কে সৃষ্টি করেছেন। তাই আদম-সন্তানরা মাটির বৈশিষ্ট্য প্রাপ্ত হয়েছে।
যেমন তাদের কেউ লাল, কেউ সাদা, কেউ কালো বর্ণের আবার কেউ বা এসবের মাঝামাঝি, কেউ বা নরম ও কোমল প্রকৃতির। আবার কেউ কঠোর প্রকৃতির, কেউ মন্দ স্বভাবের, আবার কেউ বা ভালো চরিত্রের। (মিশকাত, হাদিস :১০০)
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসে ছিলাম, এমন সময় এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললো—
আমার একটি সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে, যার গায়ের রং কালো। তিনি বললেন, তার এই কালো রং কোথা থেকে আসলো? সে বলল, জানি না কোথা হতে এসেছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার নিকট উট আছে কি? সে বললো, হ্যাঁ। তিনি বললেন, সেগুলোর রং কি? সে বললো, লাল বর্ণের। তিনি প্রশ্ন করলেন, এগুলোর মধ্যে কালো উট কালো বর্ণের সাথে অন্য বর্ণ মিশ্রিত আছে কি? সে বলল, মিশ্রিত রং এর উটও এগুলোর মধ্যে আছে।
তিনি প্রশ্ন করলেন, ওই লাল বর্ণের মিশ্ৰিত উট কোথা থেকে আসলো? সে বললো, বলতে পারি না কোথা থেকে এসেছে, হয়তো কোন ঊর্ধ্বতন পুরুষের কারণে হয়ে থাকবে।
বর্ণনাকারী বলেন, এই জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন, যে সন্তান তার স্ত্রীর গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছে তাকে অস্বীকার করা উচিত নয়। কিন্তু ওই সময় অস্বীকার করতে পারবে, যখন সে বলে যে, আমি তাকে অশ্লীল কাজে লিপ্ত দেখেছি, আর আমার এই কথাও জানা আছে যে, সে ব্যাভিচারিণী। (নাসাঈ, হাদিস : ৪৬)