মালদ্বীপে তারাবির পড়িয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি হাফেজ কামরুল

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াতের ভিডিও শেয়ার করতেন হাফেজ কামরুল আলম। চলতি বছরের শুরুতে নজরে পড়েন পৃথিবীর অন্যতম নয়নাভিরাম ও অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ মালদ্বীপের। শুরু হয় প্রবাসীদের সহযোগিতায় যোগাযোগের চেষ্টা। সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষে এখন দেশটির ফুবামুলাহ’র মসজিদ আল ইনারায় সুললিত কণ্ঠে তারাবির নামাজ পড়িয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি হাফেজ কামরুল।

সিলেটের বালাগঞ্জের মাহবুবুর রহমান ও সাহেদা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান কামরুল আলম। প্রাইমারি স্কুলে পড়া অবস্থায় ভর্তি হন মাদ্রাসায়। জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেটের (জেডিসি) পরীক্ষার পর নিজ ইচ্ছায় দুই বছরের মাথায় হিফজুল কোরআন শেষ করেন তিনি। বর্তমানে আলিম দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন কামরুল।

হাফেজ কামরুল আলম বলেন, গত বছর চট্টগ্রামের জেলা মডেল মসজিদে তারাবি নামাজের ইমামতি করি। সেখানকার পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের ভিডিও ইউটিউবে মালদ্বীপের একটি সরকারি মসজিদ কমিটি দেখতে পায়। খোঁজ নিয়ে দেখেন আমি বাংলাদেশি। তখন তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের মসজিদে রমজানের তারাবি নামাজের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

কামরুল আলম বলেন, পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় সনদপত্র পাঠাতে বলে তারা। নথিপত্র জমা দেয়ার পর সরকারিভাবে স্পেশাল ভিসা দিয়ে তাকে বিমানের টিকিট দেয়া হয়।

হাফেজ কামরুল বলেন, ‘হুলুমাল আইল্যান্ডে অবস্থিত মসজিদ আল শেখ কাসিম বিন আল-থানিতে অতিথি ইমাম হিসেবে প্রথমবার তারাবি পড়াচ্ছি। এটি মালদ্বীপের মধ্যে অন্যতম নান্দনিক এবং বড় মসজিদ। সেখানে একসঙ্গে ১৫০০ জনেরও বেশি নামাজ আদায় করতে পারেন।’

মালদ্বীপে অনেক বাংলাদেশি ভাই রয়েছেন, যারা এ রমজানে দেশে যাওয়া ইচ্ছা করেছিলেন। কিন্তু আমি সেখানে যাবো শুনে এবং নামাজ পড়ানোর পর অনেকে আর দেশে যাননি। তারা নিয়মিত আমার পেছনে তারাবির নামাজ পড়ছেন। অনেকেই আমাকে মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইসের সুরে তেলাওয়াতের কারণে সুদাইস বলে ডাকেন। এটা অনেক ভালোলাগা করে। নিজেও কোরআন খতমের শুরু থেকেই উনাকে খুব বেশি অনুসরণ করতাম। তার তেলাওয়াতের ধরন, সুর ও কণ্ঠ আয়ত্তে আনার চেষ্টা করতাম, যোগ করেন কামরুল।

তিনি বলেন, শুরুতে হিরিলান্দো আইল্যান্ডের মসজিদ আল লুবাবীতে নামাজ পড়ানোর কথা ছিল। মালদ্বীপের বেশিরভাগ মসজিদে আট রাকাত তারাবিতে খতম করানো হয়। কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশিরাসহ অনেকেই তাতে অভ্যস্ত না। পরে স্থানীয় সাবেক এক সংসদ সদস্য ফুবামুলাহ’র মসজিদ আল ইনারায় নিয়ে যান। বর্তমানে এই মসজিদেই ২০ রাকাত তারাবির পাশাপাশি ৮ রাকাত কিয়ামুল লাইলের নামাজ পড়াচ্ছি।

মালদ্বীপে অবস্থানরত বাংলাদেশি এবং সেখানকার স্থানীয়দের আন্তরিকতা ও ভালোবাসা পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

মালদ্বীপের সাবেক সংসদ সদস্য আলী ফাজাদ বলেন, হাফেজ কামরুল আলমের তেলাওয়াত খুবই শান্ত এবং প্রশান্তিদায়ক। তারাবির জন্য এখানে আসা সেরা ইমামদের একজন তিনি। পুরো দ্বীপ থেকে সবাই এবং অনেক বিদেশি তার তেলাওয়াত শুনতে আসে। আল্লাহ তার মঙ্গল করুক।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

হজ মৌসুমে ভিজিট ভিসাধারীদের মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

নূর নিউজ

রাশিয়া তুরস্কের সঙ্গে যৌথভাবে ড্রোন বানাতে চায়: এরদোগান

নূর নিউজ

শাহবাজ শরিফকে যা বললেন সৌদি যুবরাজ

নূর নিউজ