ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির দামবৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা বিশ্বেই অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে।
দীর্ঘ দুই বছরের করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই পেট্রল এবং খাদ্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মার্কিন ভোক্তা মূল্য ত্বরান্বিত হয়েছিল জুন মাসে। যার ফলস্বরূপ ৪০ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ অবস্থায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাসাভাড়াও। কোনোভাবেই ভাড়া বৃদ্ধির লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না। এতে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।
চলতি বছরের জুলাইতে বাসা ভাড়া বেড়ে রেকর্ড পর্যায় পৌঁছেছে। গত কয়েক মাস ধরেই বাসাবাড়া ঊর্ধ্বমুখী।
বুধবার (২৪ আগস্ট) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যমানের বাসাবাড়া জুলাইতে বেড়ে নতুন রেকর্ড হয়েছে। এ সময় এ ধরনের একটি বাসার জন্য মাসে গুণতে হয়েছে এক হাজার ৮৭৯ ডলার, যা এক বছর আগের তুলনায় ১২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
এখনো যেকোনো আকারের বাসাবাড়া এক বছর আগের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি রয়েছে। বর্তমানে একটি স্টুডিওর জন্য ভাড়া গুণতে হচ্ছে এক হাজার ৫৫৫ ডলার, যা ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি, এক বেডরুমের জন্য পরিশোধ করতে হয় এক হাজার ৭৪৫ ডলার, যা ১২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি ও দুই বেডরুমের বাড়া দুই হাজার ১০৩ ডলার, যা ১১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলে বাসাভাড়া বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। মিয়ামিতে বাসাভাড়া এক বছর আগের তুলনায় ২৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে, যা ৫০ টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। বৃদ্ধির দিক দিয়ে এরপরেই অবস্থান করছে নিউইয়র্ক, বোস্টন, শিকাগো ও ওরল্যান্ডো।
নিজেদের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে বাসা খুজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে মার্কিনিরা। বাসা ছেড়ে নতুন জায়গায় যাওয়াটাও অনেক ব্যয়বহুল হওয়া চরম বিপাকে পড়েছেন জনগণ।
শুধু বাসা ভাড়া বৃদ্ধির উচ্চহারই নয়, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান ঋণ ব্যয় আগামী বছরের প্রথম দিকে মন্দার আশঙ্কাকে বাড়িয়ে তুলছে। টানা তিন মাসে দ্বিতীয়বারের মতো সংকোচনের মুখে পড়েছে মার্কিন অর্থনীতি। এপ্রিল ও জুনের মধ্যে টানা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের এই সংকোচনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কার আরও বেড়েছে।
বর্তমানে মার্কিন অর্থনীতিকে লড়তে হচ্ছে আকাশ ছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে।
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করেছেন, মার্কিন অর্থনীতিতে মন্দা নেই, সেই ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। পোড় খাওয়া ডেমোক্রাট বাইডেনের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার প্রমাণ হিসেবে সমালোচকরা এখন এই প্রতিবেদন নিশ্চিতভাবেই সামনে আনবে।