আপাতদৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে জো বাইডেন এগিয়ে থাকলেও ফল কিন্তু পাল্টে যেতে পারে যে কোনো সময়। গণনা শেষ হওয়া রাজ্যগুলোর ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে বাইডেন ‘ম্যাজিক ফিগারের’ (২৭০) প্রায় কাছাকাছি চলে আসলেও শেষ পর্যন্ত তিনিই যে বিজয়ী হবেন এটা এখনও নিশ্চিত নয়।
ভোট গণনা বাকি রয়েছে কয়েকটি রাজ্য। এর মধ্যে যে কোনো একটি ছোট রাজ্যের ফলও পুরো চিত্র ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিতে পারে। ভোট গণনা শেষ হয়নি পেনসিলভানিয়া (২০), নর্থ ক্যারোলাইনা (১৫), জর্জিয়া (১৬), নেভাদা (৬) এবং আলাস্কার (৩) মতো রাজ্যে। এর মধ্যে আলাস্কায় অবশ্য ট্রাম্পের জয় প্রায় নিশ্চিত।
পেনসিলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া— এই তিনটি বড় রাজ্যেই কিন্তু এগিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও প্রাপ্ত ভোটে দুই প্রার্থীর ব্যবধান খুবই সামান্য। এদিকে নেভাদায় বাইডেন এগিয়ে থাকলেও দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান কম। এ ছাড়া এই রাজ্যের এখনও ২৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষ হয়নি। ফলে কিছুই বলা যাচ্ছে না আপাতত।
গণনা বাকি থাকা ৬ রাজ্যের মধ্যে শুধু নেভাদায় এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। এখানে বাইডেন ট্রাম্পের চেয়ে মাত্র ৮ হাজারের কম ভোটে এগিয়ে আছেন। ফলে আরও ২৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষে ফল কোনদিকে যাবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। বাইডেন যদি শেষ পর্যন্ত এখনও হেরে যান তাহলে তার জেতা খুব কঠিন হয়ে যাবে।
এদিকে এগিয়ে থাকা চার রাজ্যে জয়ের সঙ্গে ট্রাম্পকে আবার নেভাদায় হারাতে হবে বাইডেনকে। তাহলেই হয়তো তিনি ম্যাজিক ফিগার ২৭০ টপকাতে পারবেন। আবার ট্রাম্পের এগিয়ে থাকা কোনো রাজ্যে বাইডেন যদি জিতে যান তাহলে সহজ জয় পাবেন তিনি। কেননা শতাংশের হিসেবে ফারাক দুই দলের মধ্য়ে খুবই সামান্য।
নেভাদায় বাইডেনের চেয়ে মাত্র ০ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটে পিছিয়ে আছেন ট্রাম্প। এদিকে চেয়ে পেনসিলভানিয়ায় ২ দশমিক ৬, নর্থ ক্যারোলাইনায় ১ দশমিক ৪, জর্জিয়ায় ০ দশমিক ৪ এবং আলাস্কায় ট্রাম্পের চেয়ে ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটে পিছিয়ে আছেন বাইডেন। জর্জিয়ায় ৯৮ শতাংশ ভোট গণনা হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেতে দেশজুড়ে মোট ৫৩৮ ইলেকটোরাল কলেজ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট হতে হলে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে জয়ের প্রয়োজন হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর হিসাব অনুযায়ী ইতোমধ্যে বাইডেন জয় পেয়েছেন ২৬৪টি। এদিকে ট্রাম্প জয় পেয়েছেন ২১৪টিতে।
তাই গণনা পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করতে রাজি নন ভোট পর্যবেক্ষকরা। তবে ফলাফল যাই হোক, সেটাই কিন্তু শেষ কথা নয়। কারণ, ট্রাম্প আগে থেকেই ‘ভোট কারচুপির’ অভিযোগ তুলে রেখেছেন। ইতোমধ্যে মামলা ছাড়াও সামান্য ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারণী রাজ্যে ভোট পুনর্গণনার দাবিও উঠেছে।
সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। বাইডেন শিবিরও তার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলেই সূত্রের খবর। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে বলেও ধারণা।