হেফাজতের উদ্যোগে আলোচনাসভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

গতকাল (২৯ মার্চ) শুক্রবার, বা’দ আসর, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, গুলশান, ঢাকায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য ও করনীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী।

সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী বলেন, রমজানে আত্মীয় স্বজন ও মুসলমানরা সবাই একসঙ্গে বসে ইফতার করা আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান সরকার ইফতার মাহফিলের ব্যাপারে কোথাও কোথাও দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেছে। যা স্রাম্প্রদায়িক উস্কানির শামিল। তিনি বলেন, নবী প্রেমিক ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে বাতিলের মোকাবেলা করতে হবে এবং দেশে কোরআন সুন্নাহর আলোকে ইনসাফ ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে স্বাধীনতার সত্যিকার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। নূরানী মাদ্রাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। মাওলানা মাহমুদুল হককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। আমরা সরকার পতন আন্দোলন করি না, কিন্তু আমাদেরকে বাধ্য করলে কোন উপায় থাকবে না।

আল্লামা খলিল আহমদ কাসেমী আরো বলেন ,ইফতার মাহফিলগুলোতে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির চর্চা ও দ্বীন ধর্ম বিষয়ে নসিহত করা হয়। রমজান আত্মসংযম, অনুকম্প ও ক্ষমা লাভের মাস। এ মাসে ত্যাগ স্বীকারের শিক্ষার মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটে ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ হয়। এই মাসের দিবস-রজনীকে আল্লাহতায়ালা খায়ের ও বরকত দ্বারা পূর্ণ করে রেখেছেন। আল্লাহতায়ালা এ মাসকে তাকওয়া অর্জনের অনুশীলন, ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সব আমলের জন্য ভরা বসন্ত বানিয়েছেন। তাই রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে চলুন, ইনশাআল্লাহ জীবনে বরকত আসবে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৬৮ হাজার গ্রাম রয়েছে। প্রত্যেক গ্রামে হেফাজতের কমিটি গঠন করতে হবে। তৃনমুল থেকে তথা; ধারাবাহিকভাবে গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, জেলা, বিভাগ কমিটি গঠন করে হেফাজতকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে।

বক্তাগণ বলেন, জামিন পাওয়া দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিককে জামিন না দিয়ে বছরের পর বছর জেলে আটকে রাখা দেশে বিচারহীনতার প্রমাণ বহন করে। বিচারহীনতার এই ধারাবাহিকতা আর চলতে দেওয়া যায় না। মাওলানা মামুনুল হক দেশের একজন বিশিষ্ট আলেমদ্বীন। ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এখনো তিনি কারাবন্দি হয়ে আছেন। আমরা ঈদের আগেই মামুনুল হককে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

তারা বলেন, ইসলাম ফোবিয়ায় আক্রান্ত একশ্রেণির ধর্মবিরোধী গোষ্ঠী এ দেশের মুসলিম প্রজন্মের মন ও মানস থেকে ইসলামের ধ্যান-ধারণা চিরতরে মুছে দেওয়ার নীলনকশা বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে পাঠ্যপুস্তককে। পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম ঘনিষ্ঠ বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে ইসলামবিরোধী বিষয়ের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সেই সব বিষয় পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দিতে হবে।

তারা আরো বলেন, দেশের বর্তমান প্রচলিত আইনে ধর্মীয় বিষয়ে কটূক্তি করলে যে ফৌজদারি ধারা রয়েছে তা জামিনযোগ্য হওয়ায় এ সংক্রান্ত অপরাধ প্রবণতা দিনদিন বেড়েই চলেছে। গত ২৪ মার্চ ভোলা জেলার তজুমদ্দিন থানার বাসিন্দা কোরিয়া প্রবাসী বসুদাস আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে চরম কুররুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। অবিলম্বে বসুদাসকে দেশে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার জন্য আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। সাথে সাথে মহান আল্লাহ তায়ালা, মহানবী (সা.), কুরআন-সুন্নাহ্ তথা; ইসলাম নিয়ে কটূক্তিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়নের জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা আবদুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা সারওয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আজিজুল ইসলাম ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মুফতী মাসউদুল করীম, মাওলানা মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার, মাওলানা বোরহান উদ্দিন কাসেমী, মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী প্রমুখ।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা জাবের কাসেমী, মুফতী আজহারুল ইসলাম, মাওলানা গাজী ইয়াকুব উসমানী, এডভোকেট জাহাঙ্গির হোসাইন, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা শামসুল ইসলাম জিলানী, মুফতী ফখরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা শরিফুল্লাহ, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা সানাউল্লাহ খাঁন, মাওলানা শরিফ হোসাইন, মাওলানা এনামুল হাসান ফারুকী প্রমুখ।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে চাপ: ঢাকায় মিলছে না আইসিইউ

আনসারুল হক

করোনায় আক্রান্ত হলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইউসুফ ফকির

আলাউদ্দিন

রোজার পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে আমদানি সহজ করার নির্দেশ

নূর নিউজ